আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের মৃত্যুর ঘটনা। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, মৃত্যু এসআইআর আতঙ্কে। শেওড়াফুলি গড়বাগানে যৌন কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, ২০০২-এর তালিকায় নাম খুঁজে পাননি তিনি। তারপর থেকেই আতঙ্কে ভুগছিলেন। 

শেওড়াফুলি স্টেশন লাগোয়া গড়বাগান যৌনপল্লীর বাসিন্দা বিতি দাস(৪৯)-এর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার। পুলিশ তাঁর ঘর থেকে দেহ উদ্ধার করেছে বলে জানা গিয়েছে। 
জানা গিয়েছে, ওই মহিলার পড়শিরা, তাঁর কোনও খোঁজ না পেয়ে, খবর দেয় পুলিশে। শেওড়াফুলি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান চাঁপদানীর বিধায়ক তথা হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃনমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইন, বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাতো,এবং স্থানীয় সাত নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর।
অরিন্দম গুঁইনের অভিযোগ, '২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না যৌন কর্মীর। নাম বাদ যাওয়ার আতঙ্কে ছিলেন। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।' স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ সিং বলেন, 'প্রায় ত্রিশ বছর ধরে ওই যৌনকর্মী এই পল্লীতে ছিলেন।' তাঁরও আশঙ্কা, এসআইআর আতঙ্কেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মহিলা। 

পল্লীর এক বাসিন্দা জানান, 'গতকাল রাতে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল বিতির। ছেলেকে নিয়ে তাঁর স্বামী চলে যান। আজ সকালে বেলায় দেখা যায় দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।' বিজেপির বক্তব্য, মৃত্যু পারিবারিক বিবাদের জেরে।

 

শুক্রবার সকালে ফের সামনে এসেছে আরও এক ঘটনা। অভিযোগ, এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলপি বিধানসভার ঢোলা থানায় কালিচরণপুর গ্রামে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কুলপির বিধায়ক যোগ রঞ্জন হালদার, এবং মথরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার। বিধায়কের দাবি, এসআইআর আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শাহাবুদ্দিন পাইকের(৪৫) মৃত্যু হয়েছে।

 

 মৃত শাহাবুদ্দিনের চার ছেলে, স্ত্রী বর্তমান। স্থানীয় একটি বেসরকারি মাদ্রাসায় পড়াতেন তিনি। গত শনিবার হৃদরোগ আক্রান্ত হন। ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে শনিবার থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত ব্যক্তির বাবা আব্দুল মজিদদের দাবি, কুলপি ব্লকে প্রকাশিত ২০০৩-এর লিস্টে তাঁর নাম আছে, ছেলেরও ভোটার কার্ড রয়েছে। তবে মৃত ছেলের স্ত্রী অর্থাৎ  বৌমার কোনও নাম বা পরিচয় পত্র ছিল না। সব মিলিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি, দাবি পরিবারের। 

 

এর আগে, ৬ নভেম্বর জানা যায়, এসআইআর আতঙ্কে মুর্শিদাবাদ জেলায় ফের আত্মঘাতী হন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ বহরমপুর থানার অন্তর্গত গান্ধী কলোনী এলাকায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম তারক সাহা (৫৪)। এদিন দুপুরে দোকান থেকে বাড়ি ফিরে এসে একটি গাছের সঙ্গে গামছার ফাঁস গলায় বেঁধে ঝুলে আত্মঘাতী হন ওই ব্যক্তি। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। 

 

প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর রাজ্য জুড়ে এসআইআর শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলার মোট চার জন ব্যক্তির এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। মৃতদের মধ্যে দু’জন আত্মঘাতী হয়েছেন এবং দু’জন দুশ্চিন্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে মৃতদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন।