মিল্টন সেন, হুগলি: জীবিত রয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। অথচ বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর)-র খসরা তালিকা অনুযায়ী তিনি ‘মৃত’। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শ্মশানে গিয়ে অভিনব প্রতিবাদ তৃণমূল কংগ্রেসের। বিজেপির কটাক্ষ, লাইমলাইটে আসার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে হইচই ডানকুনি পুরসভা এলাকায়।
মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে খসরা তালিকা। নির্বাচন কমিশনের মৃত ও স্থানান্তরিতদের তালিকায় মৃত হিসাবে নাম প্রকাশিত হয়েছে ডানকুনি পৌরসভার ১৮ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সূর্য দের। কিন্তু দিব্যি জীবিত রয়েছেন ডানকুনি পুরসভার কাউন্সিলর। অথচ খসড়া তালিকায় তিনি মৃত। যা নিয়ে তুমুল হইচই পড়েছে ডানকুনি পুরসভা এলাকায়। এদিন বাতিলের তালিকা নিজের নাম মৃত দেখার পর নিজে পায়ে হেঁটেই কালিপুর শ্মশানে পৌঁছে যান সূর্য। সঙ্গে তাঁর সহকর্মীরাও। সূর্যের দাবি, নির্বাচন কমিশন যখন তাঁকে মৃত দেখিয়েই দিয়েছে, তখন তিনি চাইছেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার সেখানে পৌঁছে তাঁর সৎকার করুক।
নির্বাচন কমিশনের এসআইআর নিয়ে শাসক তৃণমূল আগে থেকেই অভিযোগ করেছিল। অভিযোগ উঠেছিল সাধারণ মানুষকে হয়রান করার জন্য এসব করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এই চক্রান্ত শুধুমাত্র বৈধ ভোটারকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ঘটনাও তারই প্রমাণ।
এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে সেখানে আমরা দেখলাম ডানকুনি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সূর্য দের নাম মৃতের তালিকায় রয়েছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আগেই বলেছি, এই রকমভাবে কত যে নাম বাদ যাবে। সূর্য একজন কাউন্সিলর, তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এটা থেকে আমরা নিশ্চিত নির্বাচন কমিশন যে কাজ করেছে তা ঠিক মতো হয়নি। আমরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, সেটা বাস্তব হচ্ছে। একটা উদাহরণ পেলাম। আরও কত আছে জানি না। আমরা কর্মীদের বলেছি ভাল করে খুঁজে দেখতে। কারণ, এটি একটি বড় চক্রান্ত।”
অরিন্দম আরও বলেছেন, “জীবিত ভোটারের নাম মৃতের তালিকায় দেখানো। বৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার একটি চক্রান্ত। সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা। অনুপ্রবেশ থেকে জিনিসপত্রের দৈনন্দিন মূল্য বৃদ্ধি। জাতপাতের রাজনীতি হানাহানি সহ নানা খামতি রয়েছে কেন্দ্র সরকারের। বহুদিন ধরেই ওরা চালাকি করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। নোটবন্দি থেকে আধার লিংক সবই কেন্দ্র সরকারের সেই চালাকির অঙ্গ। সাধারণ মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সব চক্রান্ত। তবে বাংলায় ওদের চক্রান্ত সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ওয়াকিবহাল। ফলে সাধারণ মানুষ এই হয়রানির জবাব দেবে ভোট বাক্সে। মানুষের রায়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বিজেপি। চতুর্থ বারের জন্যও আবারও বাংলার মুখ্য মন্ত্রী হবেন দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি।”
বিজেপির ডানকুনি স্থানীয় নেতা কৃষ্ণেন্দু মিত্র বলেন, “সূর্য দে নিজে কাউন্সিলর। লোক নিয়ে ঘুরেছেন। এসআইআর ক্যাম্প করেছেন। এখন বলছে তাঁর নাম নাকি বাদ গেছে। এটা কি ইচ্ছাকৃত। এটা জেনে শুনে করা হয়েছে। লাইমলাইটে আসার জন্য এটা করে দিলেন। নির্বাচন কমিশন কখনই নির্দেশ দেয়নি জীবিত মানুষকে মৃত বলে দেখিয়ে দাও।”
