আজকাল ওয়েবডেস্ক: মানভূমের ইতিহাস আর ঐতিহ্য নিয়ে সম্প্রতি আয়োজিত হল একটি জাতীয় স্তরের আলোচনাচক্র। পুরুলিয়ার বিক্রমজিৎ গোস্বামী মেমোরিয়াল কলেজের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ আইসিএসএসআর-এর অর্থানুকূল্যে আয়োজিত এই আলোচনাচক্রের বিষয় ছিল, 'এক্সপ্লোরিং মানভূম ইন আ গ্লোবালাইজড ওয়ার্ল্ড: হিস্ট্রি, জিওগ্রাফি, ল্যাঙ্গয়েজ, লিটারেচার, কালচার অ্যান্ড সোশিও-ইকোনমিকস।'
আলোচনাচক্রটির উদ্বোধন করেন সিধু-কানু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য পবিত্রকুমার চক্রবর্তী। আলোচনাসভার সূচক বক্তৃতাটি প্রদান করেন কবি ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এবং সাহিত্য আকাদেমির প্রাক্তন পূর্বাঞ্চল-সচিব ড. অংশুমান কর।
উপস্থিত ছিলেন, সাহিত্য আকাদেমির প্রাক্তন সচিব ড. রামকুমার মুখোপাধ্যায়, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং কলা অনুষদের অধ্যক্ষ ড. তপন মণ্ডল-সহ অনেকেই।
আহ্বায়ক ও কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. স্নিগ্ধদীপ চক্রবর্তী সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। মানভূম জেলার রাজনৈতিক অস্তিত্ব বর্তমানে আর না থাকলেও মানভূঁইয়া ভাষা ও সংস্কৃতি কীভাবে এই অঞ্চলের মানুষগুলিকে জীবনেমরণে জড়িয়ে রেখেছে, তা উঠে এসেছে দু'দিনের এই আলোচনাচক্রে।
মানভূম অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবেই বহুমাত্রিক। তার অতীতেতিহাস ঘটনাবহুল, সংগ্রামময়। চুয়াড় বিদ্রোহ থেকে সাঁওতাল বিদ্রোহ, সিপাহি বিদ্রোহ, গিরু গান্ধীর কংগ্রেসি আন্দোলন থেকে '৫৬-র ভাষা আন্দোলন এবং চরৈবেতি।
আলোচনাচক্রের বক্তাদের বক্তব্যে মানভূমের সমৃদ্ধ ভাষিক-সামাজিক এবং রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কথা, তার মূলভাবটি অক্ষুণ্ণ রাখবার কথা, মানভূমকে ঘিরে আশা ও আশঙ্কার যাবতীয় চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।
কবি অংশুমান কর ভারতচন্দ্রকে উদ্ধৃত করে একটু অন্যভাবে বলেন যা নাই মানভূমে তা নাই ভারতে। তিনি বলেন, নগরায়ন ও যন্ত্রায়নকেই সভ্যতার একমাত্র প্রকল্প বলে বহুকাল অবধি দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধ স্বরটিও কিন্তু পরস্পর্ধী হিসেবে এতদিনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আধুনিকতার বিনির্মাণ হয়ে ক্রমশ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে উত্তরাধিকতার বোধ। অন্য বক্তাদের আলোচনা থেকেও এই প্রত্যাশার বার্তাটিই ধ্বনিত হয়েছে।
