আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। মৃত্যু হতেই ঢোকানো হয় শব ঘরে।সেখান থেকে বের করতেই উধাও মৃতার শরীরের বহুমূল্যের সোনার গয়না।
মৃতের গা থেকে গয়না চুরির অভিযোগ জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের শব ঘর থেকে মৃতদেহের শরীরের লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরির অভিযোগ। কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার।
সোমবার রাতে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে আসার পথে মৃত্যু হয় জলপাইগুড়ি র ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের মরিচ বাড়ির বাসিন্দা মনখুশি বাউলির।এদিন সকালে ময়নাতদন্তের আগে মৃতদেহ দেখতে এসে পরিবারের লোকজন দেখতে পান, মনখুশি দেবীর শরীরের সমস্ত গয়না উধাও। নাক, কান, গলার কোনও গয়নাই নেই। যার দাম প্রায় লক্ষাধিক টাকা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় নিতে না চাওয়ায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার দারস্থ হয় পরিবার। ঘটনার তদন্তের দাবি জানান তাঁরা। গয়না ফেরত না দিলে মৃতদেহ না নেওয়ারও হুমকি দেয় পরিবার। এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করলে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।
মৃতার নাতনি পুর্নিমা রায়ের দাবি, 'আমরা কালকে হাসপাতালে যখন নিয়ে আসি, তখন দিদিমার শরীরে নাকের, কানের, গলার এবং মালার লকেট ছিল। রাতে তিনি মারা যাওয়ার পর সবাই শোকগ্রস্ত ছিলেন। যার ফলে কেউ রাতে এই বিষয়ে কথা বলেননি। সকালে বিষয়টি নিয়ে জিঞ্জাসা করা হলে কোনও উত্তর মেলেনি।'
'অন্যদিকে মৃতার ছেলে পলাশ বাউলী বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক পরীক্ষানিরীক্ষা করার সময় সব স্বাভাবিক ছিল। এদিন সকালে আমরা বিষয়টি দেখতে পাই।'
গত অক্টোবরে উত্তরবঙ্গের আরেক হাসপাতালে আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছিল। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল থেকে দুই মৃতদেহ বদল। নিজের বাবা ভেবে অন্য মৃতদেহের মুখে আগুন কিশোরের। কালচক্রে নিজের বাবার মৃতদেহর মুখাগ্নি করা হল না ছেলের।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ রদবদল। ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা জুড়ে। ঘটনাটি শুনলে অনেকে আশ্চর্য হলেও, বাস্তবে এই ঘটনা ঘটেছে শনিবার আলিপুরদুয়ারে।
আলিপুরদুয়ারের দুই প্রান্তের দু'টি পৃথক অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায়, ময়নাতদন্তের পর দু'জনের মৃতদেহ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় চরম বিভ্রান্ত তৈরি হয়। অভিযোগ পরিবারগুলির নজর এড়িয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের মর্গে অদলবদল হয়ে যায় দু'টি মৃতদেহ। প্রথমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের কামাখ্যাগুড়ি এলাকায়।
কারণ ওই এলাকার বাসিন্দা পেশায় হোটেল কর্মী রবীন্দ্র দাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় শামুকতলা থানার তেঁতুল তলার একটি ধাবা থেকে। ওই ধাবাতেই কাজ করতেন রবীন্দ্র দাস। শনিবার সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। কিন্তু ময়নাতদন্তের পর তাঁর মৃতদেহ যখন কামাখ্যাগুড়ির বাড়িতে পৌঁছয় তখনই হইচই শুরু হয়ে যায়। মৃতদেহের মুখ খুলতেই অন্য এক ব্যক্তির মৃতদেহ দেখে অবাক পরিবার। পরিবারের দাবি মৃতদেহটি রবীন্দ্র দাসের না।
অন্যদিকে শনিবার সকালে ফালাকাটা শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজেপাড়াতে নিজের রান্নাঘর থেকে স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ দাসের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠায় ফালাকাটা থানার পুলিশ। গণেশের মৃতদেহের সঙ্গে যান তাঁর ভাই ও আত্মীয়রা। কিছুদিন আগে গণেশের স্ত্রী ও মা মারা যাওয়াতে তাঁর তেমন কেউ নেই। ময়নাতদন্তের পর সঙ্গে লোকজন বেশি না থাকায়, ওই মৃতদেহ ফালাকাটায় না ফিরিয়ে আলিপুরদুয়ার শোভাগঞ্জ শ্মশানে দাহ করে গণেশের ছেলে গোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে কার্তিক দাস।
তাতেই জটিলতা তুঙ্গে ওঠে। পরিবার আপত্তি তোলায় পুলিশ অনেক বুঝিয়ে রবীন্দ্র দাসের বাড়ি থেকে গণেশ দাস'র মৃতদেহটি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু সেই মৃতদেহ নিয়ে আসার আগেই গণেশ দাস ভেবে রবীন্দ্র দাসের মৃতদেহ গোবিন্দ দাস মুখাগ্নি করে দাহ শুরু করে দেন।
এদিকে রবীন্দ্র দাসের ছেলে বিক্রম দাস নিজের বাবার মৃতদেহ নিতে পৌঁছলে ততক্ষণে রবীন্দ্র দাসের মৃতদেহ অধিকাংশ দাহ অবস্থায় দেখতে পায়। মৃতদেহ দাহ হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বিক্রম দাস। এরপর পুলিশ তাঁকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ঘটনায় নিজের বাবার শেষকৃত্য থেকে বঞ্চিত হন বিক্রম দাস।
অন্যদিকে, নিজের বাবার বদলে অন্য কারও মৃতদেহ শেষকৃত্য করার বিষয় জানতে পেরে মাথায় হাত কার্তিক দাসের। তবে পুলিশ গণেশ দাসের প্রকৃত মৃতদেহ নিয়ে গেলে, রবীন্দ্র দাসের চুল্লির পাশেই ফের কাঠের চুল্লি তৈরি করে ফের নিজের বাবার মুখে আগুন দেন কার্তিক দাস। নিজের বাবার মৃতদেহে মুখাগ্নি করতে পেরে কার্তিক দাস কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও, নিজের বাবার মৃতদেহ হারিয়ে বিষাদে বিক্রম।
