আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে দেখা মিলেছিল তার। বন দপ্তরের আধিকারিকদের মনে অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। অবেশেষে দেখা মিলল তার। নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে বন দপ্তরের গোপন ক্যামেরায় ধরা দিল বিরল প্রজাতির কস্তুরী মৃগ অর্থাৎ মাস্ক ডিয়ার। এত দিন পর এই হরিণের খোঁজ মেলায় উচ্ছ্বসিত বন দপ্তরের আধিকারিকরা। এই হরিণের নাভি থেকে তৈরি সুগন্ধী বেশ জনপ্রিয়। তাই চোরাশিকারিদের নজর থাকে হরিণগুলির উপর। তাই সতর্ক বন দপ্তর।
বন দপ্তরের তথ্য বলছে, ১৯৫৫ সালে শেষবার দার্জিলিংয়ের সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে কস্তুরী মৃগের দেখা মিলেছিল। এরপর এই হরিণের অস্তিত্ব নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। এটিকে বিলুপ্ত বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩-২০২৪ সালে রেড পান্ডার সংখ্যা গোনার জন্য সমীক্ষা চালায় ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। সমীক্ষার জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ১১২ মিটার উঁচু নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের জঙ্গলে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়। সেই ক্যামেরাতেই হরিণের ছবি ধরা পড়েছে। সমীক্ষা শেষে ফুটেজ খতিয়ে দেখতে গিয়ে কার্যত অবাক হয়ে যান আধিকারিকরা। দেখা যায়, নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে ফাদ পাতা ক্যামেরায় কস্তুরী মৃগের উপস্থিতির প্রমাণ রয়েছে।
কস্তুরী হরিণ হিমালয় অঞ্চলের আদিবাসী স্তন্যপায়ী প্রাণী, যার মধ্যে চারটি প্রজাতি রয়েছে: কালো কস্তুরী হরিণ (Moschus fuscus), হিমালয় কস্তুরী হরিণ (Moschus leucogaster), আলপাইন কস্তুরী হরিণ (Moschus chrysogaster), এবং কাশ্মীর কস্তুরী হরিণ (Moschus cupreus)।
মূলত ঐতিহ্যবাহী ওষুধ এবং সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহৃত মূল্যবান কস্তুরী গ্রন্থির জন্য এই প্রাণীটিকে চোরাশিকারিদের হুমকির মুখে পড়তে হয়। এই কারণে কস্তুরী মৃগ আইইউসিএন রেড লিস্টে বিপন্ন হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ। অরুণাচল প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, সিকিম এবং উত্তরাখণ্ডে কস্তুরী হরিণের নিশ্চিত জনসংখ্যা থাকলেও। পশ্চিমবঙ্গে তাদের উপস্থিতি অস্পষ্ট ছিল। শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১৯৫৫ সালে।
নেওরা ভ্যালি জাতীয় উদ্যানটি মধ্য হিমালয়ে ১৬০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা আন্তঃসীমান্ত ভূদৃশ্যের অংশ, যা নাতিশীতোষ্ণ, উপক্রান্তীয় এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় আবাসস্থল দ্বারা চিহ্নিত।
