আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর ২৪ পরগণার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জড়ো হওয়া বাংলাদেশীরা চাইলেই তাঁদের দেশে ফিরে যেতে পারবেন না। সীমান্ত পার করার আগে তাঁদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে এদেশে তাঁদের কোনো অপরাধ আছে কি না। সবকিছু খতিয়ে দেখার পরেই তাঁরা তাঁদের দেশে ফিরতে পারবেন। 

 

এবিষয়ে দক্ষিণবঙ্গের বিএসএফ মুখপাত্র ডিআইজি এন কে পাণ্ডে জানিয়েছেন, "এটা একটা পদ্ধতি। একটা নির্দিষ্ট গাইডলাইন অনুযায়ী হয়। যে বা যারা দেশে ফেরার জন্য সীমান্তের কাছে অপেক্ষা করছেন তাঁদের সম্পর্কে আগে খোঁজ নেওয়া হবে তাঁরা কোনো অপরাধ করে লুকিয়ে ছিলেন কি না। যদি না থাকে তবে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসারে তাঁরা ফিরে যাবেন।" 

 

এসআইআর চালু হওয়ার পর ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরতে ঢল নেমেছে বাংলাদেশীদের। এরাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার স্বরূপনগর হাকিমপুরে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে এদেশে বেআইনিভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা তাঁদের সমস্ত লটবহর নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। উদ্দেশ্য নিজের দেশে ফিরে যাওয়া। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে এই অনুপ্রবেশকারীরা লোটা-কম্বল নিয়ে ভারতীয় সীমানার কাছে অপেক্ষা করছেন তাঁদের নিজের দেশ বালাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য। 

 

সীমান্তের কাছে জড়ো এই বাংলাদেশী বাসিন্দাদের একটি অংশের অভিযোগ, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি অংশ তাঁদের কাছে খাবার বিক্রি করতে প্রথমে অস্বীকার করেছিলেন। যার জন্য তাঁরা মহিলা ও শিশুদের নিয়ে খুব অসুবিধায় পড়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বাসিন্দা ও সমাজসেবীরা। 

 

এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্বের উদ্যোগে এই বাংলাদেশীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে শুকনো খাবার, পানীয় জল ও বিস্কুট, লজেন্সের মতো জিনিস। স্থানীয় বাসিন্দা ওহিদুল গাজী জানিয়েছেন, এসআইআর শুরু হওয়ার পর প্রথম প্রথম এই এলাকা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জন অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী যাতায়াত করত। এখন প্রতিদিন প্রায় ১০০র কাছাকাছি বাংলাদেশী সীমান্তের কাছে এসে হাজির হচ্ছেন। যাঁদের মধ্যে একদিকে যেমন আছেন বয়স্ক মহিলারা তেমনি আছেন শিশুরাও। রাতের অন্ধকারে ঠান্ডায় তাঁদের কষ্ট হচ্ছে দেখে তাঁদের জন্য ত্রিপল টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।‌ সেইসঙ্গে একবেলা করে তাঁদের জন্য খিচুড়ির ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

 

সীমান্তে আটকে থাকা বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা মেহেদী হাসান রহমান জানান, বেশ কয়েকবছর আগে তিনি বিএসএফকে ফাঁকি দিয়ে এই দেশে প্রবেশ করেন। এপারে এসে তিনি গানবাজনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর বাবা কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে দিন যাপন করছিলেন। কিন্তু এসআইআর চালু হওয়ার পর এবার দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।