আজকাল ওয়েবডেস্ক: এবার স্কুলের মধ্যেই এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ। ঘটনাস্থল শিলিগুড়ি। অভিযুক্ত ওই স্কুলের এক সাফাই কর্মী। ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। বিক্ষোভে উত্তাল হয় স্কুল। পুলিশের হাতে আটক অভিযুক্ত সাফাই কর্মী পাপ্পু বাসফোড়।  শিলিগুড়ির এই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি যথেষ্ট পুরনো। এলাকায় খুবই জনপ্রিয়। পঠনপাঠনের মান উন্নত হওয়ায় এই স্কুলে ভর্তি হতে পড়ে লম্বা লাইন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ছাত্রীটির সঙ্গে এই আচরণ করা হয়েছে সে স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। অভিযোগ, সোমবার সে যখন স্কুলের শৌচালয়ে যায় তখনই ওই সাফাই কর্মী পাপ্পু সেখানে গিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। স্কুলের একটি সূত্র জানায়, স্কুলটি সকাল সাতটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত চালু থাকে। মাঝে সকাল ন'টায় টিফিনের জন্য পড়ুয়াদের ছাড় দেওয়া হয়। সেই সময় ওই ছাত্রী শৌচালয়ে গেলে তখনই অভিযুক্ত সাফাই কর্মী তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে। 

ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। প্রথমে আতঙ্কের কারণ বুঝতে না পারলেও এরপর তার অভিভাবকরা বিষয়টি বুঝতে পারেন। অভিভাবকদের কাছে বিষয়টি খুলে বলে নিগৃহীতা ওই ছাত্রী। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই স্কুলের বাকি অভিভাবকরা। অভিযোগ ওঠে, ঘটনার কথা জানার পরেও স্কুলের তরফে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। অভিভাবকদের দাবি, এতবড় একটা দুষ্কর্মের খবর জানার পরেও স্কুলের তরফে পুলিশকে কিছু জানানো হয়নি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধানশিক্ষক রণবীর পুরকায়স্থ দাবি করেছেন, তিনি এবং স্কুলের বাকি শিক্ষকরা আলোচনা করে অভিযুক্ত ওই সাফাই কর্মীকে মঙ্গলবার ধরার ছক কষছিলেন।

আরও পড়ুন: এসির তলায় নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন চিকিৎসক, রক্তাক্ত অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থেকে মৃত্যু রোগীর, যোগীরাজ্যের ঘটনায় শোরগোল

যদিও অভিভাবকদের দাবি, এরকম একটা ঘটনা পুলিশকে না জানিয়ে নিজেরা তদন্ত এবং ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা ধামাচাপা দেওয়ারই সামিল। এদিন সকাল থেকেই স্কুলে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। প্রধানশিক্ষকের গাফিলতির অভিযোগের সঙ্গে অভিযুক্ত পাপ্পুকে গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা স্কুল চত্বর। পঠনপাঠন শিকেয় ওঠে। গোলমালের খবর পেয়ে স্কুলের সামনে চলে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁরাও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। ঘটনার কথা জানতে পেরে স্কুলে চলে আসে স্থানীয় প্রধাননগর থানার পুলিশ। তারা এসে অভিভাবকদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও নিজেদের দাবিতে অটল থাকেন তাঁরা।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এবং স্কুলের সম্পত্তি রক্ষার জন্য পুলিশের তরফে বসানো হয় পিকেট। অভিযুক্তকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রধাননগর থানায়। আপাতত ওই থানায় ছাত্রীর পরিবারের তরফে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, আরজিকর এবং আইআইএমের ঘটনার পর এবার ফের উত্তরবঙ্গের স্কুলে এই ধরনের ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই স্কুলের বাকি অভিভাবকরাও। অনেক অভিভাবক জানিয়েছেন, সময় মতো পুলিশ খবর পাওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে কারণে কড়া নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।