আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় এসআইআর শুরু হয়েছে। সেই আবহের মধ্যেই শনিবার তাহেরপুরে সভা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।
কিন্তু তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলেন না। অডিওবার্তায় ভাষণ দিলেন উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে এসআইআর নিয়ে কোনও আশার বাণীই শোনা গেল না।
বিশেষ করে এদিন সভায় প্রচুর মতুয়া উপস্থিত হয়েছিলেন। এসআইআরের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলা থেকে প্রচুর নাম বাদ পড়েছে।
সেই আবহে অনেকেই আশা করেছিলেন এদিন প্রধানমন্ত্রী এসে কিছু না কিছু আশার বাণী শুনিয়ে যাবেন। কিন্তু এসআইআর প্রসঙ্গ পুরোপুরি এড়িয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী।
এসআইআরের পর থেকেই অনেকের মনে নাগরিকত্ব নিয়ে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। আদৌ নাগরিকত্ব থাকবে কিনা তা নিয়ে অনেকেই ভয়ে রয়েছেন।
সেই আবহে প্রধানমন্ত্রীর মুখে কোনও আশার বাণী শোনা যায় কিনা তার জন্য সভাস্থলে এসেছিলেন অনেকে। কিন্তু শেষে নিরাশ হতে হল সকলকেই।
কোনওরকমে ভাষণ দিলেন যার বেশিরভাগটা জুড়েই রইল বিহার নির্বাচনের প্রসঙ্গ। বিহার ভোটে এনডিএ জোট কার্যত একপেশে জয় পেয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফলের দিনও মোদির মুখে শোনা গিয়েছিল যে, বিহার ভোটের ফলাফলের প্রভাব বাংলায় পড়বে। এদিনও ভাষণের অনেকটা সময় সেই কথাই বলে গেলেন তিনি।
ফলে, যাঁরা আশা করে এসেছিলেন যে তাঁদের সমস্যার কোনও সুরাহা হবে সেটা তো হলই না। সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় বসে থেকে থেকে অসন্তোষ বাড়ল সভাস্থলে।
বাংলা. গত এক মাসে এসআইআর চলাকালীন একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। এদিন প্রধানমন্ত্রী একটা ঘটনার প্রসঙ্গও আনলেন না।
তারপরেই প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ দিশাহীন এবং বাংলা বিরোধী। এস আই আর জনিত কারণে যারা হতাশার মধ্যে পড়েছেন তাদের মধ্যে নরেন্দ্র মোদির ভাষণ হতাশা তৈরি করেছে। কারণ তিনি সেই বিষয়ে কিছু বলেননি। নরেন্দ্র মোদি তৃণমূল বিরোধিতা করতে গিয়ে বাংলার বিরোধিতা করছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। বাংলার মানুষকে ভাতে মারছে।'
এদিন অডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিহার থেকে গঙ্গার জল বাংলায় পৌঁছবে।' বোঝাতে চাইলেন বিহারের জয়ের প্রভাব পড়বে বাংলাতেও।
তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গল রাজ চলছে। সবাই মুক্তি চাইছে। সেজন্যই মানুষ বলছেন 'বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।' রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এখানকার সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত। তৃণমূল যদি মোদি বা বিজেপির বিরোধ করতে চায় তাহলে বারবার করুক। কিন্তু বাংলার উন্নয়ন বা এখানকার মানুষের স্বপ্ন কেন ভেঙে দিচ্ছে? হাতজোড় করে বলছি একবার বিজেপিকে সুযোগ দিন। ডবল ইঞ্জিন সরকার তৈরি হোক।'
মোদির দাবি, ভারতের অন্যান্য রাজ্য বিশেষ করে ত্রিপুরা, বিহারের মতো বাংলার প্রতিবেশী রাজ্যগুলি যেখানে এগোচ্ছে সেখানে বাংলা পিছিয়ে যাচ্ছে।' উল্লেখ্য, এদিন দুটি রাস্তার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। যাতায়াতের জন্য এই দুটি রাস্তা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাও উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এদিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় আসার পথে মৃত্যু হয়েছে চার ব্যক্তির। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি একজন। তাঁদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
