আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে চলতি ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) আবহে মতুয়াগড়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার জোড়া কর্মসূচিতে বনগাঁয় গিয়েছেন তিনি। প্রথমে বনগাঁর ত্রিকোর্ণ পার্কে সমাবেশ। তারপর চাঁদপাড়া থেকে ঢাকুরিয়া হাইস্কুল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ব়্যালিতে অংশ নেবেন মমতা। 

বক্তৃতার শুরুতে হেলিকপ্টার প্রসঙ্গে বিজেপি আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, “আমি হেলিক্পটার ব্যবহার করি না। গাড়িতে গাড়িতে ঘুরি। রাজ্য সরকারের একটি হেলিকপ্টার রয়েছে। ভাড়ায় নেওয়া রয়েছে। সকাল ১০টায় এখানে আসার কথা ছিল। সকালে হঠাৎ জানতে পারি হেলিকপ্টার যাবে না। ভোটের আগেই সংঘাত শুরু হয় গেল। কিন্তু এতে আমার ভালই হল। আমার রাস্তা আমি অনেক জায়গা ঘুরে আসলাম। মানুষের সঙ্গে কথা বললাম। বিজেপিকে বলি আমি যে খেলাটা খেলব, সেই খেলায় কেউ আমায় ছুঁতে পারবে না। রাস্তা দিয়ে আসায় আরও বেশি মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ হয়েছে।”

এস আই আর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এসআইআর করতে তিন বছর সময় লাগে। ২০০২ সালে তাই হয়েছিল। আমরা বলেছি কোনও বৈধ ভোটার বাদ যাবে না। এখন নিয়ম পাল্টে যাচ্ছে। কমিশন ঠিক করে দিচ্ছে কে সরকারে বসবে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ হওয়া উচিৎ। এর আগে আধার কার্ড করালো। সেখানে সবার টাকা খরচ হয়েছে। আমায় পর্যন্ত টাকা খরচ করতে হয়েছে। আধ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে।” 

নবান্ন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার হেলিকপ্টারে বনগাঁ যাওয়ার কথা ছিল মমতার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেটির লাইসেন্স সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে সড়কপথে বনগাঁ যেতে হয় তাঁকে। জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক মাস ওই হেলিকপ্টারটি মমতা ব্যবহার করেননি। সোমবার হেলিকপ্টারটির উড়ানের মহড়াও দেয় কিন্তু সেই সময় লাইসেন্সের বিষয়টি সামনে আসেনি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় মুখ্যমন্ত্রীর সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর আড়াইটে নাগাদ পদযাত্রা গওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হেলিকপ্টার বিভ্রাটের ফলে মমতা সড়কপথে যাওয়ায় সভার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়। 

রাজ্যের প্রায় তিন কোটি মানুষ নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ভুক্ত। উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার ৩১টি আসনে মতুয়া ভোট ফ্যাক্টর। ৭৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোটের প্রাধান্য রয়েছে। রাজ্যে এসআইআর শুরু হওয়ার পরে মতুয়াদের একাংশের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মতুয়া অনুগামীদের নিয়ে অনশনে বসেছেন মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সদস্য তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। 

মঙ্গলবারের প্রতিবাদ সভায় বিজেপি প্রদত্ত মতুয়া কার্ডের প্রসঙ্গও তোলেন মমতা। সকলের কাছে জানতে চান কারা কারা ১০০ টাকা খরচ করে এই কার্ড করিয়েছেন। সকলকে অভয় দিয়ে তিনি বলেন, “ভয় নেই কেউ মতুয়া কার্ড, রামকৃষ্ণ মিশনে সদস্য হতেই পারেন। কিন্তু বিজেপি মিথ্যে কথা বলছে। আপনারা ভয় করবেন না। তৃণমূল কংগ্রেস এবং আমি সব সময় আপনাদের পাশে আছি।”

এদিন তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে প্রবল কাজের চাপে বিভিন্ন বিএলও-দের মৃত্যুর প্রসঙ্গও। এর পাশাপাশি, বিএলও-দের প্রশিক্ষণের অভাব এবং অন্যান্য বিষয়েও সরব হন মমতা।