আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার সকালে বারাসত ফরচুন বামনগাছি এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় একটি ম্যাটাডরের ধাক্কা লাগে প্রীতম ঘোষ নামে বছর বত্রিশের এক যুবকের। এরপরই তড়িঘড়ি এলাকার বাসিন্দা ও তাঁর বাড়ির লোকজন প্রীতমকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসেন। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা। প্রীতমকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এরপরই দেহটি ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন বাড়ির লোককে ডেকে ময়না তদন্তের পর দেহটি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তখন বাড়ির লোক অভিযোগ করেন প্রীতমের একটি চোখ নেই। সেটি তুলে নেওয়া হয়েছে।
এই অবস্থায় হাসপাতালের মর্গের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন প্রীতমের পরিজনরা। ভিড় জমে যায় রাস্তায়। অন্যদিকে এদিন ঠাকুরনগর থেকে দলীয় একটি অনুষ্ঠান সেরে গাড়ি করে যশোর রোড ধরে ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর গাড়ি যখন বারাসত মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের গেটের সামনে পৌঁছয় তখন ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জানান মৃত প্রীতমের পরিজনরা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পরিবারের লোকজন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আর্জি জানান। দীর্ঘক্ষণ মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে এবং মৃতের পরিবারের একজনকে চাকরিও দেওয়া হবে।
জানা যায় বারাসত কাজীপাড়া এক নম্বর রেলগেট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন প্রীতম ঘোষ। গত ১৫ দিন আগে একটি কন্যা সন্তানের বাবা হন। সামান্য রোজগারে সংসার চলত এই পরিবারটির। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রীতমের বাড়ির লোকজন। পরিবারের আর্জি তদন্ত করে দোষীদের যেন চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে এবং তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে দেহটিকে আবারও পরিবারের থেকে নিয়ে বারাসত মর্গে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের এমএসভিপি ডাঃ অভিজিৎ সাহা জানান, ওই পরিবারের লোকজন যারা ছিলেন তাঁরা তাঁর কাছে আগেই এসেছিলেন। তিনি জানান, 'আমরা পরিবারের লোকজনকে জানিয়েছি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য। লিখিত অভিযোগ দিলেই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী নিজে নির্দেশ দিয়েছেন তদন্ত করার জন্য। যত দ্রুত সম্ভব আমরা তদন্ত করব। যদি পরিবার তদন্ত চান তাহলে দেহটিকে রাখতেই হবে নইলে কিন্তু তদন্তের ব্যাঘাত ঘটবে।'
