আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি হওয়ার পর মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উপর প্রথম 'শোকজের' খাঁড়া নেমে এল। গত কয়েকদিন ধরে সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের 'দল বিরোধী' বিবৃতি দেওয়ার জন্য বুধবার তাকে 'শোকজ' করা হয়েছ, সূত্রের খবর তেমনটাই। জানা গিয়েছে,  তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির পক্ষ নিয়ে এবং দলের দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কে হুমায়ুন গত কয়েকদিনে যে ধরনের মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে করেছেন তার জন্যই এই 'শোকজ' সিদ্ধান্ত ভরতপুরের বিধায়ককে। 

হুমায়ুন কবিরকে 'শোকজের' জবাব আগামী তিন দিনের মধ্যে দেওয়ার জন্য দলের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। হুমায়ুন কবিরের উত্তর পাওয়ার পরেই দল পরবর্তী পদক্ষেপ করবে, সূত্রের খবর তেমনটাই।

২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে রেজিনগর কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে জেতার পরের বছরই হুমায়ুন তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে উপনির্বাচনে পরাজিত হয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় দলের সংগঠনের একাধিক দায়িত্ব পালন করেন হুমায়ুন। তবে ২০১৪ সালের শেষের দিক থেকে অভিষেক ব্যানার্জি ,মমতা ব্যানার্জি এবং মুকুল রায় সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য করতে শুরু করেন হুমায়ুন কবির। এই কারণে ২০১৫ সালের ২৬  ফেব্রুয়ারি হুমায়ুনকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এরপর কংগ্রেস এবং বিজেপি ঘুরে ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিট পান হুমায়ুন। গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে চলতে থাকা 'সিনিয়র-জুনিয়র' বিতর্কে সম্প্রতি অভিষেক ব্যানার্জির পক্ষ নিয়ে প্রকাশ্য বিবৃতি দিতে শুরু করেন হুমায়ুন। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী করার দাবী তোলেন তিনি। এর পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বিভিন্ন বিবৃতি দিয়েছেন হুমায়ুন। 

বুধবার সকালেই দলের তরফ থেকে হুমায়ূনকে শোকজ করার খবর জানানো হয় বলে সূত্রের খবর। হুমায়ুন এই প্রসঙ্গে বলেন, সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে আমি 'শোকজের' খবর জেনেছি। চিঠি পেলে তার উত্তর দলকে আমি দিয়ে দেব।  ২০১৫ সালেও আমাকে বিনা নোটিসে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।'
 
তিনি বলেন,  'দল করতে গিয়ে জেনে শুনে আমি কখনও কোনও নেতা বা মন্ত্রীকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করিনি। তবে মুর্শিদাবাদের রাজনীতির প্রেক্ষাপট কলকাতার রাজনীতি থেকে আলাদা। আমি বেঁচে থাকলে রাজনীতি এবং নির্বাচনের ময়দান ছেড়ে যাব না। এখন যারা দলে ক্ষমতা ভোগ করছে তাঁরা একসময় আমাকে কংগ্রেস ছেড়ে চলে আসার জন্য 'গাদ্দার' বলেছিলেন। তাই আমাকে আর নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই।'