আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান রেল স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। স্টেশন চত্বরে ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে আহত একাধিক যাত্রী। তাঁদের ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় রেল স্টেশন চত্বরে।

পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত জানান, এই মহিলা যাত্রী চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামার সময় ভারসাম্য হারিয়ে সিঁড়িতে পড়ে যান। তাঁর সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন যাত্রীও টাল সামলাতে না পেরে নিচে পড়ে যান। ঘটনার পরপরই প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) এবং রেলকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের সাহায্য করেন।

স্টেশনে কর্তব্যরত রেলওয়ে চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন আহতদের। প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার বিকি রাউত জানিয়েছেন, ‘তখন চার, ছয় ও সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ছিল। চার নম্বরে বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইন, ছ’নম্বরে রামপুরহাট লোকাল আর সাত নম্বরে আসানসোল লোকাল দাঁড়িয়ে ছিল।

ট্রেন ধরতে গিয়েই হুড়োহুড়ি শুরু হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিঁড়িটা খুব ছোট, আর একই সময়ে রামপুরহাট ও আসানসোলের প্যাসেঞ্জারসহ হাওড়া লোকাল ধরার জন্য যাত্রীদের ভিড় বেড়ে যায়। সেই চাপেই কয়েকজন পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন।’ রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় দু’জন যাত্রী সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।

তাঁদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অন্যদিকে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় সাতজন আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক আহতের স্বামী অরূপ দাস জানান, ওঠানামার হুড়োহুড়িতে পড়ে যাই আমরা।

কিছু মানুষ ছিটকে পড়েন। এক মহিলা সাফাইকর্মী জানান, ওই সময় তিনটি ট্রেন এসে পড়ে। অনেকে নামতে চান। ট্রেন ধরবেন। কিছু মানুষ ফেরার তাড়ায় ছিলেন। সিড়িটা ছোট হওয়ায় এমন ঘটে যায়। রেল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল।

পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনার ফলে রেল চলাচলে কোনও প্রভাব পড়েনি। সমস্ত ট্রেন সঠিক সময়েই চলাচল করছে। এই ঘটনার ফলে স্টেশনে কোনও ভিড় বা বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। অন্যদিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে ফের উঠছে নিরাপত্তা ও যাত্রী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী বর্ধমান স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন।

কিন্তু সংকীর্ণ সিঁড়ি ও পর্যাপ্ত রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মীর অভাব নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রেল প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘দুর্ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে আকস্মিক। আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। স্টেশনে পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।’

আহতদের দেখতে বর্ধমান হাসপাতালে আসেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। রেলের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি। তিনি জানান, 'আহতদের চিকিৎসা চলছে। একজনের পায়ের আঘাত গুরুতর।'