আজকাল ওয়েবডেস্ক: তারকেশ্বর ধর্ষণ কাণ্ডে নাটকীয় মোড়। ২৪ ঘণ্টা পেরোতেই পুলিশের জালে মূল অভিযুক্ত। চার বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে ঠাকুরদাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল পুলিশ। তার কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। পুলিশের অনুমান, চার বছরের শিশুর ধর্ষণে মূল অভিযুক্ত এই ঠাকুরদা। দীর্ঘ জেরার পর রবিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 

সূত্রের খবর, নাবালিকার মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের অভিযোগটিও প্রমাণিত হয়েছে। হাসপাতালে যখন শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই সময় এলাকায় ছিল না অভিযুক্ত ঠাকুরদা। তাতেই পুলিশের সন্দেহ হয়। এরপরই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। জেরায় তার বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। পুলিশের আরও অনুমান, ভোররাতে ধর্ষণের সময় অভিযুক্ত ঠাকুরদা মত্ত অবস্থায় ছিল। 

প্রসঙ্গত, ভোর রাতে মশারি কেটে চার বছরের শিশুকে তু্লে নিয়ে গিয়ে পাশবিক অত্যাচার। তারকেশ্বরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে থানায় তুমুল বিক্ষোভ। চার বছরের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়েছে তারকেশ্বরে। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি। প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ, পরে থানার সামনে বিক্ষোভ বিজেপির। অভিযোগ যৌন নির্যাতনের ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পুলিশ।

শনিবার ভোরে তারকেশ্বর স্টেশন চত্বরে আশ্রয় নেওয়া চার বছরের শিশুকন্যাকে ঘুমের মধ্যে মশারি কেটে তুলে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ। ঠাকুমার পাশেই শুয়েছিল ওই শিশু। শিশুর পরিবারের দাবি, শনিবার ভোর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না শিশুটিকে। হন্যে হয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। 

শনিবার দুপুরে স্টেশন সংলগ্ন ড্রেন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ শিশুটির যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল। তাহলে হাসপাতাল থেকে পুলিশে কেন খবর দেওয়া হয়নি, উঠছে প্রশ্ন। 

প্রাথমিক চিকিৎসার পর দুপুরেই শিশুটিকে নিয়ে পুলিশের কাছে যায় শিশুর পরিবারের সদস্যরা। থানা থেকে তাদের চলে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ।
যদিও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পর ফের মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের মধ্যেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা কর্মীরা। পাশাপাশি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিজেপি।

স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, চার বছরের শিশুর উপর চরম অত্যাচার চালানো হয়েছে। যে বা যারা ঘটিয়েছে পুলিশ তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।
পুলিশ জানিয়েছে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে মৌখিক অভিযোগ পেয়েই প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং শিশুটির মেডিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছে তারকেশ্বর থানার পুলিশ।

তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় জানান, 'অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি রেল পুলিশের অন্তর্গত। রেল পুলিশের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে আমার মনে হয়। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে সকালেই অভিযোগ জানানোর কথা জানানো হয়েছিল। চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তরিত করার কথা শুনে দুঃস্থ ওই পরিবার থানা থেকে চলে যায়। পরবর্তী সময় শিশুটির চিকিৎসা সহ সব রকম ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।'

বিজেপি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক পর্না আদক বলেন, 'একটা চার বছরের শিশুর নিরাপত্তা নেই।কে করেছে আমরা এর সঠিক বিচার চাই।' জানা গেছে, আহত শিশুটিকে চন্দননগর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হুগলী জেলা গ্ৰমীন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পকসো আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।