আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবাসরীয় দুপুরে ফের ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বাংলা। আবারও ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদ। পাঁচদিনে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। যদিও এবার এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। 

সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ফরাক্কায়। দুর্ঘটনাটি ঘটে ফরাক্কা ব্লকের ২ নম্বর কলোনি এলাকার একটি বাড়িতে। আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বাড়ির যাবতীয় আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছয়। কয়েক ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। 

তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনীও। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের সময় ওই বাড়িতে কোনও সদস্য ছিলেন না। যার জেরে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বিস্ফোরণের জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে নিয়ন্ত্রণে আসায়, খানিকটা স্বস্তিতে স্থানীয় বাসিন্দারা। 

প্রসঙ্গত, গত বুধবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার অন্তর্গত কুমারসন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের রামেশ্বরপুর গ্রামে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হল এক  শিশুর। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও পাঁচজন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ওই বাড়িতে রান্না করার সময় একটি গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার ফেটেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই বাড়িতে অন্য কোনও দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক মজুত করা ছিল কিনা পুলিশ তাও খতিয়ে দেখছে। 

কান্দি থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'প্রাথমিক তদন্তে আমাদের অনুমান একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর ওই বাড়িতে আগুন লেগে যায়। সেই সময় ঘরের মধ্যে থাকা ছ'জন গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হন।অগ্নিদগ্ধ এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।' 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ওই নাবালিকার নাম আমিনা পারভীন (৩)। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে আনিসুর শেখ, নুরজাহান বিবি, আল্লাদি বিবি, রুলি বিবি এবং রিজবা বিবি নামে পাঁচজন গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে অগ্নিদগ্ধ পাঁচজনেরই অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। একাধিক আহত ব্যক্তি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না বলে হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুর একটা নাগাদ রামেশ্বরপুর গ্রামে আনিসুর শেখের বাড়িতে রান্না করছিলেন পরিবারের কয়েকজন মহিলা। সেই সময়ই হঠাৎই বিকট শব্দ শুনতে পান গ্রামের লোকজন। প্রথমে অনেকেই মনে করেছিলেন ওই বাড়ির মধ্যে মজুত করে রাখা বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীরা দেখতে পান বাড়ির মধ্যে থাকা মোটরসাইকেল সহ প্রায় সমস্ত কিছুতে আগুন ধরে গিয়েছে। গ্রামের লোকেরাই জল ঢেলে সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
 
মকবুল শেখ নামে ওই গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, 'দুপুর একটা নাগাদ ওই বাড়ির মহিলারা যখন রান্না করছিলেন সেই সময় একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তারপরেই ওই বাড়িতে আগুন লেগে যায়। গ্রামের লোকজন গিয়ে ওই বাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পুরুষ এবং মহিলা সদস্যদের উদ্ধার করে স্থানীয় গোকর্ণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে সকলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল  কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।' 

স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, আগুন লাগার পর ফলে ওই বাড়িতে রাখা দু'টি গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হয়েছে এবং সেগুলো ফেটে দু'টুকরো হয়ে গিয়েছে।  
মৃত ওই নাবালিকার এক আত্মীয় মুকলেসেনা বিবি বলেন, 'কিছু কাজ থাকার জন্য আমরা আজ পাশের গ্রামে আত্মীয়র বাড়িতে গিয়েছিলাম। দুপুর নাগাদ আমরা  শুনতে পাই আমাদের বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।' তিনি বলেন, 'আমরা শুনেছি বাড়িতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে আমার মা, দিদি, নাতনি সহ আরও কয়েকজন রয়েছেন।'