আজকাল ওয়েবডেস্ক: খেলতে খেলতে পা পিছলে খালে পড়ে গিয়েছিল এক শিশু। দু'দিন পর আজ তার মৃতদেহ উদ্ধার হল। শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। মৃতের নাম ঋষি জয়সারা(৪)। উত্তরপাড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের খাল পাড়ে কিছু ঝুপড়ি রয়েছে। সেখানেই বসবাস পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রবি জয়সারার। তাঁর চার বছরের শিশু পুত্র কয়েকজনের সঙ্গে খেলা করছিল গত রবিবার বিকালে।
খেলতে খেলতে হঠাৎ করে পা পিছলে খালের জলে পড়ে যায় শিশুটি। সে সময় স্রোত থাকায় ভেসে চলে যায় ২০ নম্বর ওয়ার্ড মাখলার দিকে। অনেক খোঁজাখুঁজিতেও তার সন্ধান পাওয়া যায় না। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ কিছুটা দূরে কচুরি পানার মধ্যে মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।
খালের পাড়ে ঝুপড়ির শিশুদের ঝুঁকি থাকে। কখনও খালে পড়েও যায়। এলাকার বাসিন্দারা এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমিত চক্রবর্তী বলেন, 'খালের পাড়ে পাকাপাকিভাবে রেলিং দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য আমি চিঠি লিখব পুরসভাকে। যাতে আর কোনও এই ধরনের বিপদ না হয়। আপাতত বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে জায়গাটি।'
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে হুগলির মাহেশের সুরকি ঘাটে। স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী, যিনি এলাকায় বুড়ো নামে পরিচিত, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে জলে তলিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরদিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক (এসডিও) শম্ভুদীপ সরকার, এসিপি শুভঙ্কর বিশ্বাস, শ্রীরামপুর ও রিষড়া পুরসভার দুই পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা ও বিজয় সাগর মিশ্র এবং শ্রীরামপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান অমিয় মুখার্জি।
প্রতিনিধি দল ঘাট এলাকা ঘুরে দেখেন এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। পরবর্তীতে এসডিও শম্ভুদীপ সরকার জানান, সাময়িকভাবে সুরকি ঘাটটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই ঘাটে এখন থেকে কেউ স্নান বা অন্য কোনও কাজ করতে পারবেন না। সুরকি ঘাট গঙ্গার একটা বিপজ্জনক বাঁকে আছে। তাই স্রোতের টান বেশি। বারবার এখানে জলে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।’
উল্লেখ্য, খুব কম সময়ের মধ্যে এই ঘাটেই চারজনের মৃত্যু হয়েছিল গঙ্গায় ডুবে। গত ২৫ মে চার নাবালক স্নান করতে নেমে ডুবে যায় সুরকি ঘাটে। ওইদিন আরও এক ব্যবসায়ী তলিয়ে গেলেন। বারবার এমন দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তবে স্থায়ীভাবে ঘাটটি কীভাবে আরও নিরাপদ করা যায়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ারও দাবি তুলেছেন তাঁরা।
এর আগে গত এপ্রিল মাসে উত্তরপাড়া থানার অন্তর্গত কোন্নগর বারোমন্দির গঙ্গার ঘাটে স্নান করতে নেমে গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিল দুই স্কুল ছাত্র। স্পিড বোট নিয়ে তল্লাশি চালায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কোন্নগর অ্যালকালি মাঠে খেলতে আসে কয়েকজন স্কুল পড়ুয়া। খেলা শেষ হয়ে গেলে একসঙ্গে পাঁচজন ছাত্র কোন্নগর বারো মন্দির ঘাটে গঙ্গাস্নান করতে যায়। স্নান করতে করতে হঠাৎই দু'জন তলিয়ে যায়। তিনজন উঠে গেলেও বাকি দু'জন আর জল থেকে উঠতে পারেনি।
