আজকাল ওয়েবডেস্ক: নদীতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হলেন এক মৎসজীবী। মৃতের নাম শম্ভু সর্দার (৩০)। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে সুন্দরবনের চামটা জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায়। এই খবর গ্রামে আসতে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।

জানা গিয়েছে, কুলতলির কাঁটামারি বটতলা এলাকার বাসিন্দা মৎসজীবী শম্ভু। ওই এলাকার বাসিন্দা অমৃত প্রামানিকের নৌকায় চেপে শুক্রবার সকালে তিন মৎসজীবী সুন্দরবনের নদীতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। সোমবার সকালে নৌকায় বসে থাকার সময় আচমকা বাঘ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পিছন থেকে আক্রমণ করে। তাঁর দেহটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। পরিবার সূত্রে খবর, তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন অনেক বছর আগে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ও মা, দুই সন্তান আছেন।

প্রসঙ্গত, জানুয়ারিতেও বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছিল এক মৎস্যজীবীর। নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন ওই মৎস্যজীবী। নাম অজয় সর্দার। ঘটনাটি ঘটেছিল সুন্দরবনের পিরখালির জঙ্গলে। অজয় সঙ্গে ছিলেন প্রতিবেশী কালাচাঁদ সর্দার ও কার্তিক সর্দার। স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পিরখালির জঙ্গলে কাঁকড়া ধরার পরে খাঁড়ি থেকে নৌকো নিয়ে বেরোচ্ছিলেন তাঁরা। পিছনে বসেছিলেন অজয়। বাঘ তাঁর উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ঘাড়ে কামড় বসিয়ে তাঁকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কার্তিক ও কালাচাঁদ লাঠি হাতে রুখে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত ‘শিকার’ ছেড়ে জঙ্গলে ফিরে যায় বাঘ। জখম অজয়কে নৌকোয় তুলে ফেরার পথ ধরেন সঙ্গীরা। তবে তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

এই ঘটনার কয়েক দিন আগে সুন্দরবনের সজনেখালি রেঞ্জের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গলের হামলায় মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়। মৃতের নাম গণেশ কাহার (৪৭)। বাসুদেব সরকার ও গোপাল বৈদ্য নামে স্থানীয় দুই মৎস্যজীবীর সঙ্গে তিনি সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তবে সেখানেই যে জঙ্গলে ঘাপটি মেরে বাঘ বসেছিল তা কারও নজরে আসেনি। এরপর মৎস্যজীবীরা অসতর্ক হতেই আচমকা গণেশের ওপর বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে।

সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কখনও কাঁকড়া ধরার জন্য আবার কখনও মাছ ধরতে গিয়ে গভীর জঙ্গলে যাওয়ার ফলে বাঘের হানায় মৃত্যু হয় মৎস্যজীবীদের। প্রশাসনের তরফে এ নিয়ে বারবার মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হয়। তারপরেও তারা সেই সতর্কতায় কর্ণপাত না করে জীবিকার টানে গভীর জঙ্গলে চলে যান। আর তাতে ঘটে বিপত্তি।