মিল্টন সেন, হুগলি: এসআইআর নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থ ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। শনিবার চুঁচুড়ায় এক সভায় যোগ দিয়ে তাঁর অভিযোগ, বিহারে ভোটের হিসেব মিলছে না। তাঁর আরও অভিযোগ, আগামী বছর পশ্চিবঙ্গ-সহ পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। এর মধ্যে কেরল বাদে বাকি তিন রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে। কিন্তু অসমে হচ্ছে না। কারণ সেখানে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। তাই ওখানে এসআইআর হচ্ছে না।
শনিবার চুঁচুড়া সিটি ক্লাবে অনুষ্ঠিত বিজেপির বিরুদ্ধে হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস আইনজীবী সেলের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রিমা। সেখানে তিনি বলেন, “বিহারে নির্বাচন হয়েছে দু’দফায়। প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। বাদ যাওয়াদের মধ্যে ২৬ লক্ষ মহিলা ভোটার রয়েছে। আবার বলছে মহিলা ভোট অন্যান্য বারের থেকে ৯ শতাংশ ভোট বেশি পড়েছে। কি করে হয়! সেই হিসেব মিলছে না।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অসম এই পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন আছে। এর মধ্যে কেরল বাদে বাকি তিন রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে। কিন্তু অসমে হচ্ছে না। এর কারণ এই চার রাজ্যে বিজেপির বিরোধী দল শাসন করছে। আর অসমে শাসন করছে বিজেপি। তাই ওখানে এসআইআর হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “এসআইআর হোক, কিন্তু কোনও বৈধ ভোটার যেন বাদ না পড়ে। তবে বঞ্চিত বাংলা আগামী ২০২৬-এ ভোটবাক্সে এর জবাব দেবে।” প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “একটা ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়ে গেল রাজধানী দিল্লির বুকে। আর আপনি ভুটানে রয়ে গেলেন। আসলেন না দিল্লির ঘটনাস্থলে।”
চন্দ্রিমা বলেন, “আপনি নাগরিক নন, তাই এসআইআর করে আপনার নাম কেটে দিল। তাহলে আবার সিএএ ক্যাম্প করে আপনাকে নাগরিকত্ব দেবে বলছে, সেটা কি করে হয়? মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। হুগলি জেলা ঐতিহাসিক জেলা। ৩৪ বছর এখানে যে অন্যায় চলেছে সেই মানুষ গুলোকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাই এখানকার মানুষ কখনওই দিল্লির লোকের হাতে কন্ট্রোল দেবে না। তাঁরা কোনও দিন দিল্লির লোককে মেনেও নেবে না। ওরা আমাদের বলে চটিচাটা। বলুক।”

বাংলার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার আইনবিরুদ্ধ নির্বাচনী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হুগলি জেলা আইনজীবীদের এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তী, সুবীর মুখার্জি, সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলী, হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী প্রিয়াঙ্কা অধিকারী, আইনজীবী সুব্রত ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য আইনজীবীরা।
রাজ্যের রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে সংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি বলেছেন, “একটি অপদার্থ রাজ্যপাল। বিজেপির চাকরি। উনি রাজ্যপাল যতদিন থাকবেন, তত দিন ভাল কিছু পশ্চিমবাংলায় হবে না। প্রশান্ত কিশোরকে কোনও দিনই আমি একজন পলিটিক্যাল পারসন মনে করি না।”
বিহারে জয়ের পর বিজেপির উল্লাসকে কটাক্ষ ছুড়ে কল্যান বলেন, “ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মতন ওরা লাফাচ্ছে, এই সময় একটু লাফিয়ে নিক।”
দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ঠযিনি ভারতবর্ষকে গণতন্ত্রবিহীন করে দিয়েছেন। যার জন্য ভারতবর্ষে শত শত মানুষ মরছেন। যিনি নির্বাচনের আগের দিন রাতে লালকেল্লার গাড়িতে বোম রেখে, বোম ফাটিয়ে জেতে সেই প্রধানমন্ত্রীর কথাতে কিছুই হবে না। জঙ্গলরাজ প্রধানমন্ত্রী তৈরি করেছে। মধ্যপ্রদেশ, দিল্লিতে জঙ্গলরাজ প্রধানমন্ত্রী তৈরি করেছেন বরং পশ্চিমবাংলার মানুষেরা অনেক ভাল আছে। ২০২০ সালে অনেক বড় বড় কথা বলেছিলেন, ২০২৬-এ আমরা জবাব দেব।
