আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআরের (Special Intensive Revision) এনুমারেশন ফর্ম বিলি করার সময় আচমকাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক বিএলও-র। জানা গিয়েছে, তিনি পেশায় এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ছিলেন। এসআইআরের সময়ে তাঁকে বিএলও-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে। মৃতার নাম নমিতা হাঁসদা (৫০)। তিনি মেমারি থানার অন্তর্গত বোহর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চক বলরাম, বাঙালপুকুর এলাকার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, শনিবার এসআইআরের এনুমারেশন ফর্ম বিলির কাজে বেরিয়েছিলেন নমিতা হাঁসদা। কাজ চলাকালীন সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘিড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জানা যায়, তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তড়িঘড়ি কালনা মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেননি। শনিবার রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার সকালে কালনা শ্মশানঘাটে মৃতার দেহ সৎকার করতে গিয়ে নমিতার স্বামী মাধব হাঁসদা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তাঁর কথায়, ‘বিডিও অফিস থেকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হচ্ছিল আমার স্ত্রীকে ফর্ম বিলির জন্য। সারাদিন কাজের পরও তাঁকে রাতে বেরোতে হয়েছে ফর্ম বিলি করতে। কাজ চলাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি।’ এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানী এ বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি। সাধারণত যাঁরা অসুস্থ, তাঁদের বিএলও-র ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, এদিন এসআইআর আতঙ্কে আত্মহত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ মিলেছে। জানা যায়, ধনেখালি থানার পূর্ব বনপুরের সন্তু সোরেনের স্ত্রী আশা সোরেন (২৮) ছ'বছরের মেয়ে মানিকা সোরেন'কে বিষ খাইয়ে , নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন।  আশা সম্পর্কে জানা গিয়েছে, পারিবারিক বিবাদের কারণে তিনি গত পাঁচ বছর ধরে বাপের বাড়িতেই রয়েছেন। সম্প্রতি এসআইআর প্রসঙ্গে ব্যাপক আতঙ্কে ভুগছিলেন। তাঁর বাপের বাড়ির সদস্যদের কাছে এসআইআর ফর্ম পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু সেখানে তাঁর ফর্ম নেই। অন্যদিকে, শ্বশুর বাড়িতে এসআইআর ফর্ম যাওয়ার কথা, অথচ তিনি থাকছেন বাবার বাড়িতে। কী হতে পারে পরিণাম, নানা প্রশ্নে তিনি জর্জরিত ছিলেন। হতাশায় ভুগছিলেন বলেও অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিবারের অভিযোগ, হতাশা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। খবর পেয়েই ওই গৃহবধুর পরিবারের কাছে হাজির হন স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্র। অন্যদিকে, মা-মেয়ে দু'জনকেই প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল স্থানীয় হাসপাতালে, পরে শারীরিক পরিস্থিতি বিচারে মা-মেয়েকে রেফার করা হয় এসএসকেএম'এ। ইতিমধ্যেই অভিষেক ব্যানার্জির দপ্তর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গিয়েছে দলীয় সূত্রে। পরিবারকে সমস্ত রকম সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। গত কয়েকদিনে, এই আতঙ্কের জেরেই চরম পদক্ষেপ বেছে নিয়েছেন একের পর এক মানুষ, অভিযোগ তেমনটাই। ঘটনায় একেবারে শুরুর দিন থেকে সুর চড়াচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। একই সঙ্গে আশ্বাস,  যে কোনও পরিস্থিতিতে, রাজ্যের সকল মানুষের সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি, দু'জনেই বারে বারে তীব্র ভাষায় জানিয়েছেন একজন বৈধ ভোটারেরও নাম বাদ গেলে, মেনে নেবেন না তাঁরা।