আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুরু হয়েছে পুর প্রশাসনে রদবদল। বিভিন্ন পুরসভায় একের পর এক নেতৃত্ব পরিবর্তনের খবর সামনে আসছে। সেই তালিকায় এবার নাম উঠল কোচবিহার পুরসভারও। বাজারে জোরদার গুঞ্জন, কোচবিহারের বর্তমান চেয়ারম্যান ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের জায়গায় নতুন চেয়ারম্যান হতে পারেন দিলীপ সাহা। এই খবর ছড়াতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোচবিহার পুরসভা ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে এই বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন পুর চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি জানান, “রাজ্য নেতৃত্বের তরফে এখনও পর্যন্ত আমার কাছে কোনো অফিসিয়াল কাগজ বা মেল আসেনি। তবে জেলা সভাপতির পক্ষ থেকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আমি ২২ বছর ধরে রাজনীতিতে আছি, ভালো করেই জানি পুরসভার রদবদল বা এই ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এক্তিয়ার জেলা সভাপতির নেই। এই বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বই শেষ কথা বলে।”
তিনি আরও বলেন, “যদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আমাকে পদত্যাগ করতে বলেন, আমি এক মিনিটের মধ্যেই পদ ছেড়ে দেব। এমনকি যদি তিনি বলেন আমাকে বিষ খেতে হবে, কিংবা ফরাক্কা ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিতে হবে, তাও আমি বিনা দ্বিধায় করব। আমি তৃণমূলের সৈনিক, দলের সিদ্ধান্তই আমার চূড়ান্ত নির্দেশ।”
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের এই মন্তব্য কোচবিহারের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন ফেলেছে। অনেকের মতে, তাঁর বক্তব্যে একদিকে দলের প্রতি অগাধ আনুগত্য প্রকাশ পেলেও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে অন্তর্দ্বন্দ্বের ইঙ্গিতও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে সংগঠন এবং পুর প্রশাসনের মধ্যে বেশ কিছু রদবদল এনেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষত নির্বাচনের আগে সংগঠনকে নতুন চেহারা দিতে চাইছে দল। সেই প্রেক্ষিতেই কোচবিহার পুরসভার এই গুঞ্জনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে, জেলা নেতৃত্বের তরফে যদিও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে দলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে একাধিক পুরসভায় কাজ ও জনসংযোগের ভিত্তিতে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার চিন্তাভাবনা চলছে।
এখন দেখার বিষয়, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি মতো সত্যিই কি রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের আগে কোনও পরিবর্তন হবে, নাকি খুব শিগগিরই কোচবিহার পুরসভায় পুর চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসবে নতুন মুখ? রাজনৈতিক মহল এখন তাকিয়ে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
