আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুবভারতী কাণ্ডের রেশ কবে মিটবে বলা মুশকিল। শুক্রবার সকালেই মেসির সফরের মূল আয়োজক ধৃত শতদ্রু দত্তর হুগলির বাড়িতে হানা দিল পুলিশ। শুক্রবার সকালে রিষড়ায় শতদ্রুর বাড়িতে যায় বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশের একটি দল। বাড়ির পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বিলাসবহুল ওই তিনতলা বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়েছে। এদিকে, স্টেডিয়াম ভাঙচুরের ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার আদালতে হাজির করানো হবে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালে প্রথমে রিষড়া থানায় যায় বিধাননগর পুলিশের দলটি। দলে এক মহিলা পুলিশ সহ পাঁচ জন ছিলেন। এরপর রিষড়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় তাঁরা রিষড়ার বাঙুর পার্কে শতদ্রুর বাড়িতে পৌঁছোন। তিন তলা বাড়িতে সুইমিং পুল, ফুটবল মাঠ রয়েছে। যদিও বাড়িতে পরিচারিকা ছাড়া কেউ ছিলেন না। তদন্তকারীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি, বাড়ির ঘরে ঘরে তল্লাশি চালানো হয়। তবে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তিন ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, তদন্তের বিষয় রয়েছে। তাই এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।
শতদ্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আয়োজক সংস্থা হিসাবে যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলার দায় তাঁর। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য পুলিশের ডিজি সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিককে শোকজ করার পাশাপাশি ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
প্রসঙ্গত, যুবভারতী কাণ্ডে পুলিশের পক্ষ থেকে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় দু’টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি প্রায় ১০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে আয়োজক সংস্থার বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, ওই বিপুল পরিমাণ কালো টাকার উৎস সন্ধানে নামতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।
এটা ঘটনা, গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার যুবভারতীতে মেসির অনুষ্ঠানে রীতিমতো তাণ্ডব চলে। এরপরেই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শতদ্রুকে। তাঁরও মেসির সঙ্গে হায়দরাবাদ, মুম্বই ও দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। আপাতত শতদ্রুকে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
অন্যদিকে, স্টেডিয়ামে ভাঙচুরের ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে হাজির করিয়ে হেফাজতে নেওয়া হবে। এই নিয়ে যুবভারতী কাণ্ডে ন’জনকে গ্রেপ্তার করা হল।
১৩ ডিসেম্বর সাড়ে এগারোটা নাগাদ যুবভারতীতে ঢোকে মেসির গাড়ি। আর ফুটবলের রাজপুত্র স্টেডিয়াম ছাড়েন ১১টা ৫৩ নাগাদ। গ্যালারিতে বিক্ষোভই ছিল যার কারণ। মেসিকে ভালভাবে দেখতে না পেয়ে দর্শকরা রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করেন। জলের বোতল উড়ে আসতে থাকে মাঠে। চেয়ার ভেঙে তাও ছুড়ে ফেলা হয় মাঠে। এই পরিস্থিতিতে মেসিকে আর যুবভারতীতে রাখার ঝুঁকি নেননি আয়োজকরা। মেসি বেরিয়ে যেতেই মাঠের ‘দখল’ নিয়ে নেন দর্শকরা। রীতিমতো তাণ্ডব চলে মাঠে।
