মিল্টন সেন, হুগলি:‌ বাংলাদেশের সাতক্ষিরা জেলা থেকে সরাসরি হুগলির কেওটায়। বাংলাদেশের শিল্পী দিপু বিশ্বাসের শিল্পের ছোঁয়ায় ক্রমশই জীবন্ত হয়ে উঠছে এপার বাংলার শারদোৎসবের থিম। দেশের সীমা ছাড়িয়ে এবার বাঙালির শারদোৎসব বাস্তবেই সার্বজনীন। অশান্ত বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনকাল বর্তমান। ঘটনার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ায় দুই পড়শি দেশের সুসম্পর্ক নিয়ে শুরু হয়েছিল টানাপোড়েন। তবে সময় যত গড়িয়েছে সম্পর্কের উষ্ণতা দূর হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটাই স্বাভাবিক। আদানপ্রদান ঘটছে দুই বাংলার শিল্পের। এখন ভারত থেকে ডিম, পিঁয়াজ ইত্যাদি সামগ্রী পাড়ি দিচ্ছে পড়শি বাংলাদেশে। পাশাপাশি দুর্গাপুজোর আগে পদ্মার ইলিশ এসে পৌঁছেছে এপার বাংলায়। চলছে ভারতে বাংলাদেশ ক্রিকেট সিরিজও। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত মিলছিল। এবার শিল্পের আদান প্রদানে সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে উঠবে, আশাবাদী দুই দেশের শিল্পীরা। তাই এই আবহেই পড়শি দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুর্গা মন্ডপে কাজ করতে চলে এসেছেন বাংলাদেশের শিল্পী দিপু বিশ্বাস। বাংলাদেশের সাতক্ষিরা জেলার শ্যামনগরে বাড়ি দীপু বিশ্বাসের।

 

 

এবছর হুগলির কেওটা নবীন সংঘের দুর্গা মন্ডপে তাঁর হাতেই ফুটে উঠছে নানান শিল্প ভাস্কর্য। দীপু বাংলাদেশের বিএল কলেজের ইতিহাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তবে ছোট থেকেই তাঁর পড়াশোনার পাশাপাশি মাটির ভাস্কর্য গড়ার নেশা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মাটির কাজ দেখে মুগ্ধ হন এপার বাংলার নবদ্বীপ আর্ট কলেজের সহকারি অধ্যাপক রঙ্গজীব রায়। তার পরেই যোগাযোগ করেন দিপুর সঙ্গে। দীপু মূলত মন্ডপের দেওয়ালে পৌরানিক দেবদেবীর ভাস্কর্য ফুটিয়ে তুলতে অভ্যস্ত। আর সেই কাজটাই তিনি করছেন নবীন সংঘের মন্ডপে। রঙ্গজীব বলেছেন, শিল্পীর কোনও দেশ হয় না। তার শিল্প কর্ম সর্বত্রই সমাদৃত। সামাজিক মাধ্যমে তিজি দিপুর খোঁজ পান। ওর হাতের কাজ দেখে তিনি রীতিমতো অবাক হয়ে যান। বাস্তবেই দিপুর হাতের কাজ অসাধারণ। শুধু বাংলাদেশ নয় ভারতের বিভিন্ন রাজ্য তথা অন্য দেশ থেকেও শিল্পীরা এসে এই মন্ডপে থিমের কাজ করছেন। এই প্রসঙ্গে শিল্পী দীপু বিশ্বাস বলেছেন, ভিসা নিয়ে তিনি এদেশে এসেছেন। তিনি মূলত মাটির কাজ করে থাকেন। কিন্তু এখানে এসে তিনি দেখলেন সিমেন্ট বালির কাজ হচ্ছে। তাতে তার অসুবিধে নেই। বাড়িতে তাঁর বাবা নেই, মা, বোন বৃদ্ধা ঠাকুমাকে রেখে এসেছেন। তাই তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে পুজোয় দেশে ফিরে যাবেন।


ছবি:‌ পার্থ রাহা