আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ ছ’বছরের বিরতির পর ভারত ও চীনের মধ্যে পুনরায় বিমান পরিষেবা চালু করতে চলেছে এয়ার ইন্ডিয়া। জানা যাচ্ছে, বিমান সংস্থাটি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি–সাংহাই রুটে উড়ান শুরু করার পরিকল্পনা করেছে।
পাশাপাশি মুম্বাই–সাংহাইয়ের নতুন রুট চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্যাম্পবেল উইলসন এই সিদ্ধান্তকে ‘দুই প্রাচীন সভ্যতা ও আধুনিক অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে সেতুবন্ধন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তাঁর কথায়, ‘দিল্লি–সাংহাই পরিষেবা পুনরায় চালু করা শুধুই একটি রুট উদ্বোধন নয়। এটি দুই মহান সভ্যতা ও দুই আধুনিক অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে সংযোগ স্থাপন।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ এয়ার করিডর পুনরায় খুলতে পেরে আমরা আনন্দিত। ব্যবসা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির নানা সুযোগ অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি যাত্রীদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এয়ার ইন্ডিয়ার উষ্ণ আতিথেয়তার অভিজ্ঞতাও উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।’
সূত্রের খবর, দিল্লি–সাংহাই রুটে সপ্তাহে চারদিন বিমান চালানো হবে। এর জন্য ব্যবহৃত হবে বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান, যাতে রয়েছে ১৮টি বিজনেস ক্লাসের আসনসহ ফ্ল্যাট বেড ও ২৩৮টি ইকোনমি ক্লাসের আসন।
তবে মুম্বই–সাংহাই রুটের সূচনার নির্দিষ্ট তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। জানা যাচ্ছে, ২০২৬ সালেই পরিষেবা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাংহাই হতে চলেছে এয়ার ইন্ডিয়ার ৪৮তম আন্তর্জাতিক গন্তব্য।
উল্লেখ্য, এক মাস আগেই ইন্ডিগো ভারত–চীন রুটে তাদের পরিষেবা পুনরায় চালু করে। ২৬ অক্টোবর কলকাতা–গুয়াংঝো বিমানের উড়ানের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। এরপর দিল্লি থেকেও গুয়াংঝোতে ফ্লাইট চালু হয়।
প্রায় পাঁচ বছর পর এই রুটে ফের পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা, অংশীদারিত্ব ও পর্যটনকে আরও শক্তিশালী করতে। এতদিন পর্যন্ত কলকাতা থেকে গুয়াংঝো যেতে যাত্রীদের বিভিন্ন ট্রানজিট শহরে থামতে হত।
অর্থাৎ, দুই দেশের দুই শহরের মধ্যে সরাসরি কোনও পরিষেবা ছিল না। সময় ও ব্যয়ের দিক থেকে যাত্রীদের ভ্রমণকে জটিল করে তুলত। নতুন এই পরিষেবার ফলে যাত্রীরা দ্রুত ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন।
পৌঁছতে সময় লাগছে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা। আগে যেখানে প্রায় ১২ ঘণ্টার ওপর লাগত, সেখান এই পরিষেবা চালু হওয়ায় ব্যাপক সুবিধা পাচ্ছেন যাত্রীরাও। কলকাতা থেকে চিনের গুয়াংঝো শহরের মধ্যে বিমান পরিষেবা চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে খুশি দেখা গিয়েছে।
এই নয়া বিমান পরিষেবা চালুর আগে কলকাতা বিমানবন্দরে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারত এবং চিন দুই দেশের নাগরিকরাই। বিমানের এক যাত্রী প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে যাত্রার শুভ সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের ডিরেক্টর পিআর বেউরিয়া। মনে করা হচ্ছে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের যাত্রীদের জন্য এই রুটটি বিশেষভাবে সুবিধাজনক হতে চলেছে।
ব্যবসায়ী, পড়ুয়া, গবেষক ও পর্যটক সব ধরনের যাত্রীই উপকৃত হবেন। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, রপ্তানি ও পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিগোর তরফে জানানো হয়েছে, নতুন এই রুটটি ভারতের আকাশ পথকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত করতে সাহায্য করবে।
একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে সংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিনিময় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। সরাসরি ফ্লাইট চালুর ফলে বুকিং প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে, যাত্রীরা তাঁদের ভ্রমণ পরিকল্পনা আরও নির্ভর যোগ্য ভাবে করতে পারবেন এবং সময় ও অর্থ উভয় ক্ষেত্রেই সাশ্রয় হবে।
