আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় প্রবল বর্ষণের জেরে ভয়াবহ ভূমিধস ও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) অন্তত ১৪ জনের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং ২০ জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। চারটি গ্রামে অন্তত ৩০টিরও বেশি বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে পড়েছে।

যে চারটি গ্রাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলি হল— কুন্তারি লগাফালি, কুন্তারি লগাসারপানি, সেরা এবং ধুরমা। সবকটি গ্রাম নন্দানগর এলাকায় অবস্থিত, যা দেরাদুন থেকে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার দূরে এবং চামোলির জেলা সদর গোপেশ্বর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে। উল্লেখ্য, নন্দানগর গত কয়েক মাস ধরেই ভূমি-ধস ও ভূমি-ধসজনিত ফাটলের সমস্যায় জর্জরিত।

জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কুন্ত্রি ওয়ার্ডে বিশালাকার পাথর ও মাটি গড়িয়ে নেমে একাধিক বাড়ির উপর ভেঙে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই অন্তত অর্ধডজন বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ঘটনার সময় সাতজন বাড়ির ভেতরে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও পাঁচজন এখনও নিখোঁজ।

আরও পড়ুন:  মার্কিন শুল্ক দ্রুত প্রত্যাহার হতে পারে! কেন এমন কথা বললেন ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা

দ্রুত তৎপর হয়েছে রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (SDRF) ও জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (NDRF)। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধারে সর্বশক্তি নিয়োগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি মেডিক্যাল টিম এবং তিনটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর কাছাকাছি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, প্রবল বর্ষণে ফুঁসতে থাকা মোখ নদী ধুরমা গ্রাম প্লাবিত করে আরও ছয়টি বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। নদীর তীব্র স্রোত গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সম্পর্কে রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রশাসনকে উদ্ধারকাজ আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুর্গত পরিবারগুলিকে সাহায্য এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

 

ভূমি-ধসের ঝুঁকি বাড়ছে এলাকায়। প্রসঙ্গত, মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই নন্দানগরে ভূমি-ধসজনিত ফাটল ও বসতভিটার ভাঙন দেখা দিয়েছিল। আগস্ট মাসে একাধিক বাড়ি ও রাস্তায় বড় বড় ফাটল ধরায় বহু পরিবার ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, লাগাতার বৃষ্টিপাত এলাকায় মাটি ও পাহাড়ের ভঙ্গুরতা আরও বাড়িয়ে তুলছে, যা ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা ডেকে আনতে পারে।

প্রশাসন জানিয়েছে, আবহাওয়া খারাপ হলে এবং ভূমি-ধস বা নদী ফুলে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিলে আরও গ্রামবাসীকে সরিয়ে নেওয়া হবে। পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। চামোলির এই বিপর্যয় আবারও স্পষ্ট করে দিল যে উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি অঞ্চল ক্রমেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আরও বেশি অরক্ষিত হয়ে উঠছে।

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">September 16, 2025