আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার, বিতর্কিত সংবিধান সংশোধনী বিল এবং উত্তাল সংসদ। ছবিটা দিনভর একই রইল। এমনকী উত্তাল পরিস্থিতির মাঝেই উঠে এল গুরুতর অভিযোগ। তারপর থেকেই নজর ছিল, সংসদে তৃণমূলের লোকসভার দলীয় নেতা, সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি ঘটনা প্রসঙ্গে কী বলছেন, সেদিকে।
বুধবার সংসদে তিনটি বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুরু থেকেই তা নিয়ে উত্তাল ছিল সংসদ। অভিযোগ, তুমুল হই হট্টগোলের মাঝেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মিতালী বাগ এবং শতাব্দী রায়কে ধাক্কা দেওয়া হয়। হেনস্থার মুখে পড়েন তাঁরা। অভিযোগের তীর কিরেন রিজিজু ও রভনীত বিট্টুর দিকে। ঘটনার পরেই সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে মিতালী জানান, বিলের প্রতিবাদ করার সময়েই কিরেন রিজিজু এবং রভনীত বিট্টু ধাক্কা দেন। পরিস্থিতির বিবরণ দিতে গিয়ে, ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন মিতালী। হামলার বিবরণ দেন তিনি।
#WATCH | Delhi | TMC MP Mitali Bagh says, "While we were protesting against the bill, Union Ministers Ravneet Singh Bittu and Kiren Rijiju attacked me, they pushed me...This is condemnable..." pic.twitter.com/5MSkVPAGqD
— ANI (@ANI)Tweet by @ANI
কেন এই আক্রমণ সংসদের ভিতরেই? কী ভাবছেন আক্রান্ত মহিলা সাংসদ? মিতালী বলেন, 'হিংস্র জন্তু হয়ে উঠেছে। আমরা সাধারণ প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। আমাদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা। আমাদের গলার আওয়াজ বন্ধ করতে পারছে না। যদি মেরেধরেও যদি থামিয়ে দেওয়া যায়।' তবে মিতালী মনে করান, মমতা ব্যানার্জির সৈনিক। হামলা, আক্রমণেও সুর চড়ানো থামাবেন না।
ঘটনা প্রসঙ্গে বুধবার বিকেলে মুখ খোলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, দল এই ঘটনায় বড় পদক্ষেপ নেবে। কীভাবে ঘটল এই ঘটনা, তা জানতে সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে কেন্দ্রকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক ব্যানার্জি।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য কোনও মন্ত্রী যদি টানা ৩০ দিন হেফাজতে থাকেন, তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে! বুধবার লোকসভায় বিল পেশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেন। বিল পেশ হওয়ার আগে থেকেই এর বিরোধিতায় সরব হন বিরোধী দলগুলির নেতারা। লোকসভায় বিল পেশ হতেই অধিবেশন কক্ষের অন্দরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধী সাংসদেরা।
আরও পড়ুন: আমুল গার্ল এবং শশী থারুরের মধ্যে কী সম্পর্ক আছে জানেন? সত্যিটি আপনার মাথা ঘুরিয়ে দেবে...
এই বিলের মাধ্যমে বিরোধীদের কণ্ঠস্বরকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলি। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ সব বিরোধী দল এককাট্টা হয়ে কেন্দ্রের এই বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সম্প্রতি বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাদের গ্রেপ্তারির মতো ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে অতীতে গ্রেপ্তার হতে দেখা গিয়েছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে তা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
I condemn the 130th Constitutional Amendment Bill, proposed to be tabled, by the Government of India today. I condemn it as a step towards something that is more than a super- Emergency, a step to end the democratic era of India for ever. This draconian step comes as a death… pic.twitter.com/Vx78R1fh6V
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial)Tweet by @MamataOfficial
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। আজকের দিনটিকে গণতন্ত্রের ‘কালো দিন’ বলছেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি বলছেন, এই বিল আসলে সুপার এমার্জেন্সি লাগু করার চেষ্টা। ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে চিরতের ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর হিটলারোচিত আঘাত হানা হচ্ছে এই বিলের মাধ্যমে। এটা আসলে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টার শামিল।'
