আবারও যৌন হেনস্থার অভিযোগ টলিপাড়ায়। অভিনয় জগতে সুযোগ দেওয়ার নাম করে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে পরিচালক ও প্রযোজকের বিরুদ্ধে। ১৮ আগস্ট, সোমবার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা উঠে এসেছে দক্ষিণ কলকাতার কসবা থানা এলাকায়। এক মহিলা কসবা থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে, তাঁকে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত দুই ব্যক্তি যৌনভাবে হেনস্তা করে এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানে তাঁকে একাধিকবার শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।

 

অভিযোগ পাওয়ার পর কসবা থানার পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং কেস নম্বর ৩৮৩, তারিখ ১৮.৮.২৫ অনুযায়ী ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৪/৩৫১(২)/৬১(২) ধারায় মামলা রুজু করে। অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির নাম এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে।

 


ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানা সূত্রে খবর উঠে এসেছে টলিউডের দুই ব্যক্তির নাম। একজন প্রযোজক এসএস উদ্দিন ও অন্যজন, পরিচালক রাজর্ষি দে। এই তথ্য যাচাই করতে আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল রাজর্ষি দের সঙ্গে। 'আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা'র পরিচালক এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। তাই এই বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।"

 

আরও পড়ুন: কলেজ রোম্যান্সে তানিকা-ঋতব্রত-কৌশানী, বন্ধুত্ব না প্রেম? কার পাল্লা ভারী?

 

অভিযোগ করে ওই মহিলা আরও জানান, প্রথমে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে তাঁকে প্রতারণা করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাধ্য করা হয়। এরপর একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় ওই দুই অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তিনি দীর্ঘদিন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় এতদিন এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে পারেননি। অভিযোগ পাওয়ার পর কসবা থানার পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

 

 

এই ঘটনার জেরে চলচ্চিত্র মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই ছড়িয়েছে এই ঘটনার কথা। ফলে ঘটনার নিন্দা শুরু হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। তদন্তের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে কসবা থানার পুলিশ।

 

প্রসঙ্গত, এর আগেও বেসরকারি চ্যানেলের ভুয়ো নথি, স্ট্যাম্প, লোগো ব্যবহার করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয় পরিচালক রাজর্ষি দে'র বিরুদ্ধে। ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান্স এবং ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের নামে টাকা তোলার অভিযোগও উঠেছিল পরিচালকের নামে। এমনকী নুসরত জাহানের সই নকল করার অভিযোগ উঠেছে পরিচালকের বিরুদ্ধে। এই সমস্ত অভিযোগ এনেছিলেন প্রযোজক অরিন্দম ঘোষ। 

 

এই প্রসঙ্গে রাজর্ষি দে আজকাল ডট ইন-কে বলেছিলেন, "এত বছর টলিউডে কাজ করছি, আজ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে কোনওদিন জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সিনেমা বানাতে গিয়ে টাকার অভাব থাকলে বাড়ির গয়না বেচেও টেকনিশিয়ানদের বকেয়া পারিশ্রমিক মিটিয়েছি। কিন্তু কোনওদিন কারওর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলিনি। একটাই প্রশ্ন রয়েছে, অরিন্দমের দেওয়া ৭৩ লক্ষ টাকার চেক বাউন্স হয়েছে দু'বার। যার জেরে ছবির শুটিং আটকে। এদিকে, এই কথা প্রযোজককে জানানোর পর একটা মিটিং ডাকেন তাঁরা। যেখানে আমি থাকতে পারিনি ব্যক্তিগত কারণ বশত। এরপরেই আমার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। এই ঘটনায় আমি খুব বিব্রত।"