প্রত্যেক জীবের মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যু ঠিক কবে এবং কীভাবে আসবে, তা অবশ্য কেউ জানে না। তবে একথা চিরসত্য, যখন-যেভাবেই আসুক, মৃত্যু একদিন আসবেই। কিন্তু মৃত্যুর পর ঠিক কী হয়? কখনও ভেবে দেখেছেন আত্মা কীভাবে দেহত্যাগ করে? এই প্রশ্ন নিয়ে মানুষের কৌতূহল চিরকাল।
বিভিন্ন ধর্মেও মৃত্যু পরবর্তী সময়ের ব্যাখ্যা রয়েছে। সাধারণভাবে মৃত্যুর পর মানুষের শরীর ধীরে ধীরে পচে যায় এবং আত্মা এক নতুন জীবনে প্রবেশ করে বলে মনে করা হয়। নতুন জীবনটি বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মানুসারে ভিন্ন হতে পারে। সম্প্রতি এই বিষয়টি বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী ও বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা ঘিরে
 
 আবারও আলোচনায় এসেছে। 
বুলগেরিয়ার দৈবশক্তিধারী বাবাভাঙা ১৯৯৬ সালে মারা যান। কিন্তু তার আগে তিনি একবিংশ শতাব্দীরও ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন। ৯/১১ হামলা থেকে শুরু করে প্রিন্সেস ডায়নার মৃত্যু, চেরনোবিল বিপর্যয়, এমনকী ব্রেক্সিট সম্পর্কেও ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন, যা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। সেই বাবা ভাঙ্গাই বলেছেন, মৃত্যু আসলে এক যাত্রার শুরু। তাঁর মতে, মৃত্যুর পর আত্মা শরীর ছাড়ে এবং এক আলোর পথে এগিয়ে যায়। সেখানে অপেক্ষা করে এক নতুন জগৎ, যা শান্তি ও প্রশান্তিতে ভরা। দৈবশক্তিধারীর মত, মৃত্যুর পর মানুষের আত্মা আরেকটি জগতে প্রবেশ করে, যেখানে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব রহস্য স্পষ্ট হয়ে যায়। এই জগতে সময় ও স্থানের সীমা নেই, এবং আত্মা এক ধরনের আলোকিত শক্তির সঙ্গে মিলিত হয়।
আরও পড়ুনঃ মঙ্গল-বুধের বিরল সংযোগে আসছে সুখের সময়! চাকরি-ব্যবসায়ে বিরাট উন্নতি, টাকার জোয়ারে ভাসবে এই ৪ রাশি
 
 অন্যদিকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৃত্যু একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এতে মানুষেত হৃদপিণ্ড ও শ্বাস বন্ধ হয়, মস্তিষ্কের কাজ থেমে যায় এবং দেহ ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। মৃত্যুর মুহূর্তে আলোর দিকে টান বা ভিন্ন ধরনের অনুভূতি আসতে পারে, যা আসলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব ও স্নায়ুর প্রতিক্রিয়ার ফল। এমনকী সম্প্রতি গবেষণায় এবিষয়ে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা যদি কাউকে মৃত ঘোষণা করেও দেন, তার পরও কিছু ক্ষণ মস্তিষ্ক কার্যকর থাকে। ওই সময়ই শরীর থেকে বেরিয়ে যায় আত্মা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মৃত্যু পথগামী রোগী, যাঁর কোনও হৃদস্পন্দন নেই, রক্তচাপও নেই, অথচ মস্তিষ্ক কিছু ক্ষণ সক্রিয় থাকে।

বাবা ভাঙ্গা যেখানে মৃত্যুকে আত্মার মুক্তি ও নতুন জগতের প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে, সেখানে বিজ্ঞান দেহের কার্যক্রমের শেষ বলে মনে করেছেন। দুই দৃষ্টিভঙ্গি একে অপরের বিপরীত হলেও, মৃত্যুর পর কী ঘটে তা এখনও রহস্যে ঢাকা। মানুষের বিশ্বাস, অভিজ্ঞতা ও গবেষণা—সব মিলিয়ে আজও উত্তর খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
