আজকাল ওয়েবডেস্ক: শ্রাবণের সোমবারে পুজো দিতে গিয়েছিলেন খাটু শ্যাম মন্দিরে। সেখানে পুজো দিয়ে ফেরার পথেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পুণ্যার্থীরা। বাড়ি ফেরার পথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন তাঁরা। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই দশজনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশের বেশি শিশু। 

জানা গেছে, আজ ভোরবেলায় পুণ্যার্থী বোঝাই একটি পিক আপ ভ্যান হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এরপর রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে সেটি। তার জেরেই মর্মান্তিক পরিণতি হল সাত শিশু সহ মোট দশজনের। গাড়ির চালক সেই সময় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল, তা ঘিরে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের দৌসা জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ভোর চারটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দৌসার বাপি গ্রামে একটি ট্রাকের সঙ্গে পিক আপ ভ্যানের সংঘর্ষ হয়েছে। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দশজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে সাতজন শিশু। বাকি তিনজন হলেন মহিলা। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। 

আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে ভাসছে উত্তরবঙ্গ, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল দেওয়াল, ঘুমের মধ্যেই মর্মান্তিক পরিণতি ২ শিশুর

তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, পিক আপ ভ্যানটির যাত্রীরা সকলেই পুণ্যার্থী ছিলেন। সালাসার বালাজি থেকে ফিরছিলেন একসঙ্গে। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ছুটে আসে পুলিশ। তড়িঘড়ি করে সকলকে উদ্ধার করে দৌসা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাত শিশু সহ মোট দশজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। একাধিক আহতকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে। 

আহতদের মধ্যে ন'জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের জয়পুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সাগর রানা নামের  এক পুলিশ আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, 'আজ ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মনোহরপুর হাইওয়েতে। দুর্ঘটনায় কমপক্ষে দশজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে। কয়েকজন আহতকে এস এম এস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।' 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রাবণের শেষ সোমবারে বিশেষ পুজোর জন্য খাটু শ্যাম মন্দিরে গিয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। সেই মন্দিরে পুজো দিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন একসঙ্গে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, পুণ্যার্থীরা সকলেই উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়াহ জেলার বাসিন্দা ছিলেন। সালাসার বালাজি থেকে দু'টি পিক আপ ভ্যানে করে সকলে মিলে ফিরছিলেন। 

দুর্ঘটনার সময় একটি পিক আপ ভ্যান খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিল। আরেকটি পিক আপ ভ্যান পিছনের দিকে ছিল। তাতে ১২ জনের বেশি পুণ্যার্থী ছিলেন। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই পিক আপ ভ্যানটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে সজোরে ধাক্কা মারে। তখনই দুমড়ে মুচড়ে যায় পিক আপ ভ্যানটি। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। 

মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেই শোকপ্রকাশ করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি‌ লিখেছেন, 'দৌসার দুর্ঘটনায় দশজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আহতদের যথাযথ চিকিৎসার আওতায় আনার জন্য। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।' মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।