আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশ সরকারের কাছে কি শিশুদের থেকে গরুর কদর বেশি? পুষ্টির জন্য বরাদ্দের সরকারি পরসংখ্যান অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দেয়। রাজ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, অপুষ্টি এবং তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জন্য প্রতিদিন বরাদ্দ যথাক্রমে মাত্র ৮ টাকা এবং ১২ টাকা। কিন্তু প্রতিদিন গরুর খাবারের জন্য বরাদ্দ ৪০ টাকা। পুষ্টি ব্যয়ের এই হালের দরুন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা।

কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রান্ত ভুরিয়ার উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন দপ্তরের তরফে বিধানসভায় দৈনিক ভাতার পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়। সরকারি তথ্য অনুসারে, মধ্যপ্রদেশে ১.৩৬ লক্ষ শিশু বর্তমানে অপুষ্টিতে ভুগছে। এর মধ্যে ২৯,৮৩০ জনকে তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এবং ১.০৬ লক্ষকে মাঝারি অপুষ্টিতে ভুগছে। রাজ্যের অপুষ্টির হার ৭.৭৯ শতাংশ, যা জাতীয় গড়ে ৫.৪০ শতাংশের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক ভূরিয়া বলেন, “সরকার অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জন্য প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ টাকা খরচ করছে, কিন্তু প্রতিদিন গরুর খাবারের জন্য ৪০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সরকারি আমলারা এক একটা সভায় হাজার হাজার টাকা করে খাবার এবং শুকনো ফলের জন্য খরচ করেন, কিন্তু অপুষ্টিতে ভোগা হাড় গিলগিলে শিশুদের খাওয়ানোর জন্য মাত্র ১২ টাকা পাওয়া যায়!” কংগ্রেস দল মধ্যপ্রদেশের পুষ্টি বাজেটকে অপর্যাপ্ত বলে সমালোচনা করেছে এবং প্রশ্ন তুলেছে যে এত কম তহবিল দিয়ে কীভাবে অপুষ্টি নির্মূল করা যেতে পারে?

আরও পড়ুন-  ভারতে আসছেন পুতিন, শুল্কযুদ্ধের আহবে মস্কো-দিল্লি আরও কাছাকাছি, ট্রাম্পকে বার্তা কৌশলী রাশিয়ার?

শিওপুর, ধর, খারগোন, বারওয়ানি, ছিন্দওয়ারা এবং বালাঘাটের মতো উপজাতি-অধ্যুষিত জেলাগুলির পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। বেশ কয়েকটি জেলায়, প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতি চার শিশুর মধ্যে একজন মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগে।

শিওপুরের এক বছর বয়সী কার্তিককে তার ঠাকুমা পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে (এনআরসি) নিয়ে এসেছিলেন। কার্তিক তিনি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একজন। কার্তিকের চেহারা খুবই দুর্বল। দেখলে মনে হবে, ত্বকের নীচে হাড় দৃশ্যমান, যা অবস্থার গন্ভীরতাকে তুলে ধরে। একইভাবে, ভিখাপুর গ্রামের ছয় মাস বয়সী যমজ গৌরব এবং সৌরভকেও তীব্র অপুষ্টির কারণে এনআরসিতে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘাটতির কথা স্বীকার করে মধ্যপ্রদেশের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী নির্মলা ভুরিয়া স্বীকার করেছেন যে, অপুষ্টি থেকে দুর্বলতে বের করে আনতে যা বরাদ্দ রয়েছে বর্তমান তা অপর্যাপ্ত। তিনি বলেন, "আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অতিরিক্ত তহবিলের অনুরোধ করেছি। অন্যান্য রাজ্যগুলিও পুষ্টি ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে।"