দু'জনে কথা বলার সময়ে একনাগাড়ে তুলে যান সেলফি। সমাজ মাধ্যমে কখনও লাইভ, কখনও বা নিজের জীবনের হালহকিকত নিয়ে লেখালেখি। এককথায় সারাক্ষণই আত্মপ্রেমে মগ্ন আপনার সঙ্গী। যাকে বলা হয় 'নার্সিসিস্ট'। এই ধরনের মানুষদের নিজেদের ভাবনায় থাকে শুধুই ‘আমিত্ব’। কিন্তু এই নিজেকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া যে সম্পর্কে 'তিক্ততা' নিয়ে আসতে পারে, এমনটাই মনে করেন মনোবিদরা। আপনার সঙ্গীর মধ্যেও কি এমন স্বভাব রয়েছে? তিনিও কি কেবল নিজেকে ভালবাসেন? কয়েকটি লক্ষণ দেখে বুঝে নিন-
১. নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া- নার্সিসিস্ট প্রকৃতির মানুষেরা নিজেদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। কারওর সঙ্গে কথা বলার সময়ে যতই অন্য কথা হোক নিজের বিষয়েই প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেন। এঁরা নিজের জীবন, নিজের কৃতিত্ব দেখাতে এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে প্রিয়জনের ভাবনা কিংবা অনুভূতি বুঝতে পারেন না। ফলে সম্পর্কে সমস্যা তৈরি হতে দেখা যায়।
২. নিজেকে বিশেষ মনে করা- এই ধরনের মানুষেরা সাধারণত অন্যদের থেকে বিশেষ গুরুত্ব পেতে চান। এমনকী যদি আপনি তাঁদের যথেষ্ট প্রশংসা কিংবা গুরুত্ব না দেন তাহলে সমস্যা হতে পারে। মান্য কথাতে তাঁরা দুর্ব্যবহারও করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে এই সব খাবার খেলেই সর্বনাশ! জ্বলবে গলা থেকে বুক, সারাদিন পিছু নেবে বদহজম
৩. অন্যদের হেয় করার প্রবণতা- নিজেকে সবকিছুতে সেরা মনে করায় অন্যদের এঁরা হেয় করেন। সঙ্গী এই প্রকৃতির মানুষ হলে তিনি আপনার আত্মীয়, বন্ধুদের কাজ নিয়ে কৌতুকের সুরে কিংবা সরাসরি নেতিবাচক মন্তব্য করতে পারেন। আপনার আত্মবিশ্বাসেও চিড় ধরাতে পারেন।
৪. সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা- যে কোনও পরিস্থিতি এবং চারপাশের মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান নার্সিসিস্ট স্বভাবের মানুষেরা। অন্যের প্রতি উদ্ধত আচরণ করেন এঁরা। আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ এবং স্বাধীনতা নিয়েও এঁদের নিয়ন্ত্রণ করার প্রবণতা থাকে।
৫. নিজের চেহারা ও পদমর্যাদা নিয়ে উদ্বেগ- নার্সিসিস্ট স্বভাবের মানুষেরা নিজের চেহারা, উপস্থিতি ও পদমর্যাদাকে খুবই গুরুত্ব দেন। নিজের যে কোনও বিষয়ের ভাবনাতেই এঁরা সারাক্ষণ মগ্ন থাকেন।

৬. সমালোচনা মানতে পারেন না- এই ধরনের মানুষেরা নিজেকে নিয়ে কারওর মন্তব্য কিংবা সমালোচনা, এমনকী নিজের উন্নতি নিয়ে পরামর্শ শুনলেও রেগে যান। অন্যর মতামতকে গ্রাহ্য না করে উল্টে তাঁদেরই দোষারোপ করতে থাকেন। প্রতিটা সম্পর্কেই ভুল–বোঝাবুঝি থাকতে পারে। কিন্তু এ ধরনের মানুষেরা নিজের ভুলটা যেন চোখেই দেখতে পান না। তাই ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনাও করেন না।
৭. হিংসার প্রবণতা- নার্সিসিস্ট স্বভাবের মানুষেরা প্রিয়জনকেও হিংসাও করতে পারেন। কেউ কেউ আবার নিজেকে এতটাই সেরা মনে করেন যে তাঁদের মনে হয়, অন্যরা তাঁকে হিংসা করেন। গন্ডগোল হওয়ার ঝুঁকি থাকে না৷
আপনার সঙ্গীর মধ্যে যদি এই ধরনের লক্ষণ দেখতে পান তাহলে উপেক্ষা না করাই শ্রেয়। আপনি সম্পর্কের কোন বিষয়গুলো নিয়ে সমস্যা অনুভব করছেন, তা নিয়ে আপনার সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন। তাঁর আচরণের কোন দিকগুলোর কারণে আপনি কষ্ট পাচ্ছেন, তা বুঝিয়ে বলতে পারেন। চাইলে কোনও মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
