আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘরে স্বামী, সন্তান। সম্পর্ক পাড়ার অন্য একজনের সঙ্গে। মেয়ে মায়ের কেচ্ছা, পরকীয়া জেনে ফেলতেই, স্বামীকে আগে ভাগেই খুন করে, প্রেমিকের নামেই দোষ দিয়ে দিল গৃহবধূ। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে পরিকল্পনা করেই একাধিক অভিযোগ দায়ের নানা সময়ে।  মামলার তদন্তে নেমে হতবাক পুলিশ।


ঘটনাটি ঘটেছে গুরুগ্রামে। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই গৃহবধূ, তাঁর প্রেমিক-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ওই ব্যক্তিকে খুন করে দেহ লুকিয়ে রাখার অপরাধে। জানা গিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম বিক্রম, বয়স ৩৭। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্রমের স্ত্রী, ৩৫ বছরের সোনি দেবী ২৮ জুলাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন এই মর্মে, যে তাঁর স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। ঠিক তিনদিন পরে, সোনি পুলিশে আর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ৩১ জুলাইয়ের অভিযোগে সোনি জানান, পাড়ার ৩৪ বছরের রবীন্দ্র তাঁকে ধর্ষণ করে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ভিডিও বানিয়ে রেখেছে সে এবং ধমকি দিয়ে রেখেছে সোনি এই কথা কাউকে জানালে, ভিডিও ভাইরাল করে দেবে।

আরও পড়ুন: ‘ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতেই হবে', প্রেমিকা রাজি না হওয়ায় চলত চুলির মুঠি ধরে মার, গলা কেটে-কুপিয়ে পালাল প্রেমিক

পুলিশ রবীন্দ্রকে আটক করতেই বেরিয়ে আসে অন্য তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় রবীন্দ্র স্বীকার করেছে, সে বিক্রমের খুনে জড়িত। একইসঙ্গে পুলিশকে সে জানিয়েছে, সোনির বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তার সঙ্গে। 

ঘটনার বিস্তারিত তথ্য দিতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সোনি এবং রবীন্দ্রের মধ্যে প্রায় এক বছর ধরে প্রেম চলছিল, সেই সময় তারা নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও তৈরি করে। রবীন্দ্রর ফোনেই সোনির মেয়ে, মায়ের সঙ্গে ওই ব্যক্তির আপত্তিকর ভিডিও দেখে ফেলে একদিন। সঙ্গে সঙ্গেই বাবাকে জানায়। স্বামী ঘটনা জেনে গিয়েছে বুঝতে পেরেই, তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সোনি।

 

হত্যার পর দেহের কী হবে? তা জানতে দু’ জনেই ইউটিউবে নানা ভিডিও দেখেন বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।  ২৬শে জুলাই, রবীন্দ্র এবং তার সহযোগীরা বিক্রমকে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় একটি গাড়িতে টেনে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তারা তাঁকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মোহম্মদপুর ঝারসা গ্রামের কাছে মাটি খুঁড়ে বিক্রমের দেহ চাপা দিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। দেহ লুকিয়ে দেওয়ার ঘটনায় রবীন্দ্রর কাকা তাদের সাহায্য করেছে বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। বিক্রমের খুন এবং দেহ লুকিয়ে রাখা, গোটা ঘটনা স্পষ্ট জানতেন সোনি। পুলিশকে, পুলিশি তদন্তকে ভুল পথে চালিত করতে, পরিকল্পনা মাফিক পুলিশে বিক্রমের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করে এবং তিন দিনের মাথায় থানায় গিয়ে আবার রবীন্দ্রর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে। 

খুনে সহায়তা করার অভিযোগে পুলিশ মণীশ (১৯) এবং ফরিয়াদ (২০)কে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার তাদের পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। শনিবার পুলিশ রবীন্দ্রের কাকা সান্তরপাল (৬০) কে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি মৃতদেহ লুকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছিলেন এবং রবিবার তাকেও পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে, অন্যদিকে সোনি দেবীকে বিচার বিভাগীয় রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।