কথায় কথায় ফ্রিজের ঠান্ডা কনকনে জলে চুমুক দেন অনেকেই। সাময়িক আরাম মিললেও, শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর এই অভ্যাস৷ তাই রেফ্রিজারেটরের বদলে মাটির কলসি, জগে জল খেতে পারেন। মাটির পাত্রে জল খেলে শুধু গলাই ভেজে না, বহু উপায়ে উপকৃত হয় শরীরও।
আসলে মাটির কলসি বা হাঁড়িতে রাখা জল প্রাকৃতিকভাবেই ঠান্ডা থাকে এবং এতে কোনও কৃত্রিম কুলিং ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় না। মাটির সংস্পর্শে এসে এই জলে কিছু বিশেষ খনিজ মিশে যায় যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। বিশেষত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই জল অত্যন্ত উপকারী বলে মত আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের। শুধু তাই নয়, উচ্চ রক্তচাপ বশে রাখতে, হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং আরও নানাভাবে মাটির পাত্রে জল খাওয়ার উপকার পাওয়া যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে কীভাবে সাহায্য করে
* খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল কমায়ঃ মাটির কলসির জলে থাকা খনিজ পদার্থ রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়াতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ সকাল বিকেল এই কাজ করলে অজান্তেই বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকি! চিনে নিন ৫ মারণ-অভ্যাস
* লিভারকে সুস্থ রাখেঃ কলসির জল লিভারকে ডিটক্সিফাই করে। সুস্থ লিভার কোলেস্টেরল উৎপাদনের ভারসাম্য বজায় রাখে, ফলে রক্তে অতিরিক্ত ফ্যাট জমে না।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ উচ্চ কোলেস্টেরল সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। কলসির জল রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক, ফলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।
* ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ মাটির জল মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকলে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

* ডিটক্সিফায়িং গুণঃ মাটির হাঁড়ির জল শরীর থেকে টক্সিন বার করতে সাহায্য করে। যেহেতু টক্সিন জমে থাকলে লিভারের উপর চাপ পড়ে, এবং তা খারাপ কোলেস্টেরল উৎপাদনেও প্রভাব ফেলে—তাই ডিটক্স একটি বড় ভূমিকা নেয়।
* মেটাবলিজম বৃদ্ধি করেঃ মাটির পাত্রের জল মেটাবলিজম বাড়ায়, ফলে শরীর দ্রুত ফ্যাট ভাঙতে পারে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমে।
* অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়ঃ নিয়মিত মাটির কলসির জল খেলে পেটের অ্যাসিডের ভারসাম্য ঠিক থাকে। হজম ঠিকঠাক হলে শরীরে ফ্যাট জমার হার কমে এবং তাতেও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
* অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণঃ মাটির পাত্রের জল দেহের প্রদাহ বা ফোলাভাব কমায়, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের অন্যতম কারণ।
কীভাবে খাওয়া উচিত
* সকালে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস মাটির কলসির জল খাওয়া ভাল।
* মাটির পাত্রের জল দিনে ২–৩ বার পর্যন্ত খাওয়া যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত নয়।
* কলসির জল ২৪ ঘণ্টার বেশি রাখা উচিত নয়, কারণ তাতে ব্যাকটেরিয়া জমার আশঙ্কা থাকে।
আরও পড়ুনঃ গোপনাঙ্গে প্রোস্টেট ক্যানসারের কামড় বুঝতেই পারেন না অধিকাংশ পুরুষ! কীভাবে চিনবেন এই রোগ?
সতর্কতা
* কলস সবসময় পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে।
* নিয়মিত জল পাল্টানো উচিত।
* যাদের কিডনি সমস্যা আছে, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই জল খাওয়া উচিত নয়।
