আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুরুষদের মধ্যে যে যে ধরনের ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তার মধ্যে প্রোস্টেট ক্যানসার অন্যতম। কিছুদিন আগেই প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুধু বাইডেন নন, সারা পৃথিবীতে পুরুষদের মধ্যে হওয়া অন্যতম প্রধান ক্যানসার এটি। এই রোগে ক্যানসার কোষগুলি প্রোস্টেট গ্রন্থিতে বিকশিত হয়। প্রস্টেট মূত্রাশয়ের নিচে অবস্থিত একটি ছোট গ্রন্থি। সাধারণত বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে এই গ্রন্থির ক্যানসার বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে বয়স ৫০ অতিক্রম করলে এই রোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সময় মতো ধরতে পারলে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব। তাই লজ্জা দূরে রেখে প্রোস্টেট ক্যানসারে সাধারণ লক্ষণগুলির দিকে নজর রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: ছেলের শুক্রাণুতে সন্তানধারণ করলেন ৭০-এর অভিনেত্রী! সন্তান না নাতি? তুমুল বিতর্ক
আরও পড়ুন: ১২ কেজির বিশাল স্তন! ফিট হয় না কোনও জামা! কেন এমন হল? তরুণীর কষ্ট শুনলে চোখে জল আসবে
কোন কোন লক্ষণ দেখে চিনবেন এই রোগ?
১.  প্রস্রাবের সমস্যা: ঘন ঘন প্রস্রাব, বিশেষ করে রাতে প্রস্রাবের বেগ আসা। প্রস্রাব শুরু করতে বা ধরে রাখতে অসুবিধা হওয়া এবং প্রস্রাবের ধারা দুর্বল বা থেমে থেমে হওয়া।
২.  প্রস্রাবে রক্ত বা বীর্যে রক্ত: প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়া (হেমাচুরিয়া) অথবা বীর্যের সঙ্গে রক্ত দেখতে পাওয়া প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি লক্ষণ হতে পারে।
৩.  তলপেটে বা কোমরের নিচে ব্যথা: তলপেট, কোমর, নিতম্ব বা উরুর উপরের অংশে একটানা ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করা, যা সাধারণত হাড়ে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়লে দেখা যায়।
৪.  ইরেকটাইল ডিসফাংশন (লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা): হঠাৎ করে লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা দেখা দেওয়া বা তা বজায় রাখতে অসুবিধা হওয়াও একটি লক্ষণ হতে পারে, যদিও এর অন্যান্য কারণও থাকতে পারে।
৫.  অজানা কারণে ওজন কমে যাওয়া ও ক্লান্তি: কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন দ্রুত কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করাও প্রোস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
এর যেকোনও একটি বা একাধিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারবেন। জেনেটিক্স, বয়স এবং জীবনধারা বহুলাংশে এই ক্যানসারের নেপথ্যে। তবে খাদ্যও প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। কিছু খাবার প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কী কী বাদ দেবেন খাদ্য তালিকা থেকে
রেড মিট: গরুর মাংস, শুয়োরের মাংস এবং ভেড়ার মাংসের সসেজ, হট ডগ প্রভৃতি প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণা অনুসারে, প্রচুর পরিমাণে লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া, বিশেষ করে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা লাল মাংস প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এর কারণ, উচ্চ তাপে মাংস রান্না করলে হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনস নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হয়, যা কোষের ক্ষতি করতে পারে এবং ক্যানসার ডেকে আনতে পারে।

দুগ্ধজাত পণ্য: ফুল ফ্যাট দুধ, পনির, মাখন, ক্রিম এবং দইতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং হরমোন থাকে যা প্রোস্টেট ক্যানসার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী প্রচুর পরিমাণে ফুল ফ্যাট দুধ এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে আক্রমনাত্মক প্রোস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ট্রান্স ফ্যাট: চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রায়শই বেকড পণ্য, ভাজা খাবার এবং প্যাকেটজাত স্ন্যাকসে ট্রান্স ফ্যাট থাকে। এই অস্বাস্থ্যকর চর্বি প্রদাহ বাড়াতে পারে এবং প্রোস্টেট ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে।

মদ্যপান: অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং প্রোস্টেট ক্যানসার-সহ বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অ্যালকোহল হরমোনের মাত্রাকেও প্রভাবিত করতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা প্রোস্টেটের ক্ষতি করতে পারে।