আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুরুগ্রামের জলমগ্ন রাস্তায় এ কী দৃশ্য! একদল শিশু সাঁতার কাটছে। সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মরশুমের বৃষ্টিপাতের সময় প্রবল বর্ষণে গুরুগ্রামের বিভিন্ন এলাকা জলে ডুবে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় তীব্র যানজট, যা সাধারণ মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগ। এই পরিস্থিতির মাঝেই এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল শিশু রাস্তায় জমে থাকা জলে সাঁতার কাটছে, মনের আনন্দে ভেসে বেড়াচ্ছে।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর, দেখা যাচ্ছে রাস্তার পাশে বাড়ির সামনের জল জমে গিয়েছে। সেই জলের মধ্যেই একটি শিশু সাঁতার কাটছে। কিছুক্ষণ পর আরেকজন শিশু এসে প্লাস্টিকের একটি রোড ডিভাইডারের সাহায্যে ভেসে বেড়াতে শুরু করে। উভয়েই হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠেছে। তারা এতই আনন্দে মেতে উঠেছে যে তারা ভুলে গিয়েছে এই দূষিত জলে স্নান করা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষ গুরুগ্রামের অবকাঠামো ও প্রশাসনের প্রস্তুতি নিয়ে সরব হয়েছেন৷
একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, 'যদি আপনি গুরুগ্রামে থাকেন, তবে বুঝে নিতে হবে আপনি পূর্বজন্মের পাপের ফল ভোগ করছেন। এখানে উচ্চমূল্যে বসবাস করেও আপনাকে সবচেয়ে বাজে অবকাঠামোর মধ্যে দিন কাটাতে হয়।' সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিডিওটি গুরুগ্রামের সেক্টর ১০এ এলাকার। সেখানে সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টিপাতের পর এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই গুরুগ্রামের অবকাঠামো নিয়ে নিজেদের হতাশা প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আবার লিখেছেন, 'শহরের এই করুণ দশা প্রতিবার বর্ষায় প্রকট হয়ে ওঠে'। এক ব্যবহারকারী লেখেন, 'প্রতিবছর ড্রেন পরিষ্কারের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। কিন্তু প্রথম বৃষ্টি হলেই সব ফাঁস হয়ে যায়। ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নত করতে হবে। শেষ কবে নতুন কোনও স্টর্ম ওয়াটার ড্রেন তৈরি হয়েছে?'
আরেকজন বলেন, 'বিশ্বাসই হচ্ছে না গুরুগ্রামের রাস্তায় বৃষ্টির জল বেরোনোর কোনও ব্যবস্থা নেই। রাস্তাগুলো পুরো কংক্রিটে মোড়ানো, কোথাও জল যাওয়ার রাস্তা নেই। একটু বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো সুইমিং পুল হয়ে যায়। অথচ এই শহরের ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে ৫০-১০০ কোটি টাকায়!'
তৃতীয় একজন মন্তব্য করে বলেন, 'গুরুগ্রাম মূল্যবান বৃষ্টির জল নষ্ট করছে। দুঃখজনকভাবে এখানে কোনও জলাধার নেই যা সেই জল সংরক্ষণ করতে পারে বা ভূগর্ভস্থ জলস্তর রিচার্জ করতে পারে।' চতুর্থ একজন বলেন, 'আমি যখন দিল্লিতে ছিলাম, তখন ভাবতাম দিল্লির অবকাঠামো খারাপ। কিন্তু যখন গুরুগ্রামে এলাম, বুঝলাম দিল্লি তো স্বর্গ ছিল গুরুগ্রামের তুলনায়। এখানে ভয়ানক অবকাঠামো, কোথাও হাঁটার মতো পেভমেন্ট নেই, আর একটু বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তাই নদীতে পরিণত হয়।'
কেও আবার ব্যাখ্যা করে বলেন, 'ঘটনাটি কেবল শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, বরং গুরুগ্রামের ভঙ্গুর নাগরিক পরিকাঠামো ও প্রশাসনের ব্যর্থতাকেও সামনে নিয়ে এসেছে'। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে। কিন্তু যেই প্রশ্নটা রয়ে যাচ্ছে তা হল এই চিত্র প্রতিবছরই দেখা যাবে, নাকি কখনও এর পরিবর্তন ঘটবে?
