প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত রসুন। আজও হেঁশেলের এই পরিচিত আনাজকে 'সুপারফুড' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমিষ রান্নায় স্বাদ বাড়ানো থেকে স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া— রসুনের ভূমিকা সবেতেই অনবদ্য। রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ। এছাড়াও ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফোলেট, নিয়াসিন এবং থায়ামিনে ভরপুর রসুন। বহুবিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত রসুন খেকে কী কী উপকার পাবেন-
* রসুন পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পারে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, বি৬, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম। এসব উপাদান ইমিউনিটি বাড়াতে অবদান রাখে। নিয়মিত রসুন খেলে সর্দি ও ফ্লু দূরে থাকে।
* খাদ্যতালিকায় কাঁচা রসুন যোগ করলে খাবার সহজে হজম হয় । বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যও রক্ষা করে।
* রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমায় রসুন। তাই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি রোগ, যেটি নিয়ন্ত্রণ না করলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।
* রসুনে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। রসুনে থাকা অ্যালিসিন বিভিন্ন রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা দেয়। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং অসুস্থতার তীব্রতা কমিয়ে দেয়। রসুনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই কার্যকর।
* রসুন শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
* রসুন খেলে স্নায়ুর সমস্যার সামাধান মেলে। অনিদ্রার সমস্যা কাটাতেও কার্যকরী রসুন।
* রসুনের সালফার যৌগ শরীরকে টক্সিন (বিষাক্ত বর্জ্য) এবং ভারী ধাতু দূর করতে সাহায্য করে। রক্তে থাকা সিসার মাত্রাও কমাতে পারে রসুন। এর ডিটক্সিফাইংয়ের প্রভাবে গ্লুটাথিয়নের উৎপাদন বাড়ে। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা যকৃৎকে বিষাক্ত বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করে।
* পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার করা হয় রসুন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন নিয়ম করে কাঁচা রসুন খেলে মহিলা ও পুরুষ উভয়ের যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়।

কীভাবে খেলে উপকার পাবেন
* সকালে খালি পেটে এক থেকে দুই কোয়া কাঁচা রসুন খান।এতে রক্তে সরাসরি পুষ্টি শোষণ হবে। এটি হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
* মধুর সঙ্গে মিশিয়ে রসুন খেলে খুব ভাল কাজ হয়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
* গরম জলে এক কোয়া রসুন মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। সঙ্গে ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
* রসুন কখনও বেশি রান্না করে খাবেন না। বরং হালকা ভেজে কিংবা স্যালাডে মিশিয়ে খান।
* রসুন কেটে ১০ মিনিট রেখে দিন। এই সময় রসুনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অ্যালিসিন তৈরি হয়। এই উপাদানই স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
