আমাদের হাতের কাছের অনেক উপাদানের আয়ুর্বেদ মতে প্রচুর ওষধিগুণ রয়েছে। তেমনই আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিম পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। স্বাদে তেতো হলেও শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে নিম পাতার জুড়ি মেলা ভার। 

ঘরোয়া পথ্য হিসাবে নিমপাতার গুণের জবাব নেই! সঠিক নিয়মে নিমপাতা খেলে বহু রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সকালে খালি পেটে ২ থেকে ৩টি নিমপাতা চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। চাইলে সামান্য গুড় দিয়েও খেতে পারেন। তাহলেই প্রাকৃতিকভাবে দাঁত হবে ঝকঝকে, দূর হবে মুখের দুর্গন্ধ, বন্ধ হবে চুল পড়াও। এছাড়াও নিয়মিত নিম পাতা খেলে আরও অনেক উপকার পাবেন। 

* বর্তমানে কর্ম ব্যস্ততময় জীবনের কারণে ভারতে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া প্রতিকারগুলির মধ্যে একটি হল নিমপাতা। প্রত্যেকদিন সকালে দু থেকে তিনটে নিমপাতা কাঁচা চিবিয়ে খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আরও পড়ুনঃ ফ্যাটি লিভারে শরীর ঝাঁঝরা হওয়ার আগাম সংকেত দেয় ত্বক! ৫ লক্ষণ না বুঝলে চর্বি জমে গলে পচে যাবে লিভার

* নিমপাতা রোজ সকালে উঠে খালিপেটে চিবিয়ে খেলে তা হজমের গণ্ডগোল থেকে রেহাই দেয়। গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে, হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে ঠিকমতো পুষ্টি শোষিত হয়। 

* নিমপাতা লিভারের সমস্যা সমাধানেও কার্যকরী। এছাড়াও নিমপাতায় ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের ভুক্তভোগীরাও উপকার পাবেন। 

* রাতে দাঁতের কোণে জমা থাকা খাবার থেকে মুখে অনেক সময়ে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। সকালে খালি পেটে প্রথমেই নিম পাতা খেলে তা এই ব্যাকটেরিসার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। মুখে গন্ধ, ক্যাভিটির মতো সমস্যা থেকে রেহাই দেয়।

* রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার সমস্যা থাকলে সকালে উঠে ২ থেকে ৩ টি নিমপাতা ধুয়ে খালি পেটে খেয়ে ফেলুন। কয়েকদিনেই উপকার পাবেন। নিমপাতা রক্ত থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করে। রক্ত পরিষ্কার থাকলে শরীরে কোনও রোগ সহজে বাসা বাঁধতে পারে না।

* দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে দারুণ উপকারী এই নিম পাতা। এই পাতা সকালে খালি পেটে খেলে শরীরকে বহু সংক্রমণ থেকে দূরে রাখা যায়।

* নিমপাতা বাতের ব্যথা দূর করে। নিমপাতা, নিমের বীজ ও ছাল বাতের ব্যথা সারাতে ভাল কাজ করে। নিমের তেলের ম্যাসাজও বেশ আরাম দেয়।

* ত্বকের সমস্যায় দারুণ উপকারি নিমপাতা। কোনও ধরনের ফোড়া হোক বা ব্রণ কিংবা ত্বকে র্যাশ হলে সকালে উঠে খালি পেটে নিমপাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও ত্বকের শুষ্কতা দূর করে, ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে নিমপাতা। ত্বকের দাগ দূর করতে এবং ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এই পাতা। 

* নিমপাতা মাথার ত্বকের চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং চুলকে আরও শক্তিশালী করে। নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও নিমপাতা জমিতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও পোকামাকড়ের কামড়ে, জ্বর, ম্যালেরিয়া, ও জন্ডিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় নিমপাতা। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে কাজ করতে পারে এই পাতা।