আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত কয়েকদিনে ঘটনা যত মোড় নিয়েছে, সাধারণ মানুষ ততবার বলেছেন, এ তো হার মানাবে সিনেমাকেও। এমনই চিত্রনাট্য, প্রায় এক দশকে ঘূণাক্ষরেও টের পেলেন না কেউ। ভাড়া বাড়িতে দিব্যি চালাচ্ছিলেন ভুয়ো দূতাবাস। সঙ্গে নিজেকে একাধিক মাইক্রোনেশনের রাষ্ট্রদূত দাবি করছিলেন। এবার সামনে এল আরও ভয়াবক কুকীর্তি, জানলে আঁতকে উঠবেন।

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, নানা সময়ে চাকরির প্রতিশ্রুতি, নিজেকে প্রভাবশালী বলে পরিচয় দেওয়া হর্ষবর্ধন অন্তত ৩০০ কোটি টাকার জালিয়াতি করেছেন, প্রাথমিক তদন্তের পর তেমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, হর্ষবর্ধন, গত এক দশকে অন্তত ১৬২ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। 

আরও পড়ুন: ছেলের মাস্টারের সঙ্গে ঘরের মধ্যেই উদ্দাম প্রেম, স্বামী হাতেনাতে ধরতেই ‘হরিওম’-এ আসক্ত স্ত্রী যা করলেন, কেচ্ছায় পাড়ায় ছি ছি

 ভুয়ো চিকিৎসক, ভুয়ো ইঞ্জিনিয়ার, ভুয়ো কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্প্রতিক সময়ে একে একে সামনে এসেছে যা তথ্যও। তাতে রমরমা ভুয়ো-বিষয়ের। এবার প্রকাশ্যে গোটা ভুয়ো দূতাবাস। ঘটনাস্থল খাস দিল্লির। ২৩ জুলাই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চোখ কপালে সাধারণ মানুষের। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য, গাজিয়াবাদের এক ব্যক্তি দিনের পর দিন এই ভুয়ো দূতাবাস চালাচ্ছেন। 


ওই ব্যক্তির নাম হর্ষ বর্ধন জৈন। ভুয়ো দূতাবাস চালানোর জন্য তিনি ব্যবহার করতেন  জাল কূটনৈতিক প্লেট। ব্যবহার করেছিলেন মোদির সঙ্গে তাঁর ছবি এবং সেই ছবি দিয়েই তিনি সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করিয়েছিলেন বলে তথ্য।

জানা গিয়েছে,  ওই  ব্যক্তি নেতাদের নানা ছবি ব্যবহার করে মানুষের মনে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতেন। বিদেশে চাকরির টোপও দিতেন সাধারণ মানুষকে। 
উত্তর প্রদেশ স্পেশাল টাস্ক ফোর্স-এর নয়ডা ইউনিটের তথ্য, গাজিয়াবাদের ওই ব্যক্তি কবি নগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতেই দিনের পর দিন অবৈধ দূতাবাস চালিয়েছেন। সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে বেশকিছু ক্ষুদ্র দেশের অর্থাৎ মাইক্রোনেশনগুলির রাষ্ট্রদূত বলেও দাবি করতেন তিনি। তিনি বলতেন, পশ্চিম আর্কটিকা, সাবোরগা, পুলভিয়া এবং লোডোনিয়ার মতো দেশগুলির রাষ্ট্রদূত পদে রয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মাইক্রোনেশন আদতে কী? মাইক্রোনেশন হল, হল একটি ছোট, স্ব-ঘোষিত সত্তা যা একটি স্বাধীন দেশ বলে দাবি করে কিন্তু কোনও সরকার বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত নয়। ওইসব মাইক্রোনেশনগুলির রাষ্ট্রদূত তিনি, তেমনটাই বলতেন। 

 জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি নিজের ভুয়ো কার্যকলাপ জনগনের কাছে আরও বেশি করে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জয় তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন কয়েকটি ছবি। একদিকে যেমন তিনি জাল কূটনৈতিক নম্বর প্লেটযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতেন অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের ছবি দেখাতেন। যাতে মানুষের, তাঁর কার্যকলাপ নিয়ে সন্দেহ না জাগে। 
‘দূতাবাস’ অভিযানের সময়, পুলিশ ৪৪.৭ লক্ষ টাকা নগদ এবং প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করে। এছাড়াও একটি অডি এবং একটি মার্সিডিজ-সহ চারটি বিলাসবহুল গাড়ি, কূটনীতিকদের ২০টি ভুয়ো ভিআইপি রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট, ১২টি ভুয়ো পাসপোর্ট, দু’টি প্যান কার্ড, বিভিন্ন দেশের ৩৪টি স্ট্যাম্প, ১২টি প্রিমিয়াম ঘড়ি, একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য নথি পাওয়া গিয়েছে।