আজকাল ওয়েবডেস্ক: মন্দিরে তখন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম। সুসজ্জিত রাধাকৃষ্ণের দুই মূর্তি, মন্দির ও মন্দির চত্বর। জাঁকজমক আয়োজন। পুরোহিতের উপস্থিতিতে শুরু হয় আরাধনা। এর কিছুক্ষণ পরেই ঘটল চাঞ্চল্যকর ঘটনা। কয়েকজন ভক্ত দাবি করলেন, শ্রীকৃষ্ণের হৃদস্পন্দন তাঁরা শুনতে পেয়েছেন।
এখানেই শেষ নয়। আসল ঘটনা ঘটল এরপরই। ভক্তদের দাবির জেরে মন্দিরে ডেকে আনা হল এক চিকিৎসককে। গলায় স্টেথোস্কোপ নিয়ে তরুণ চিকিৎসক হাজির ও হলেন। এরপর মূর্তির বুকে স্টেথোস্কোপ দিয়ে হৃদস্পন্দন পরীক্ষাও করলেন! আদৌ হৃদস্পন্দন শুনতে পেলেন কি তিনি? তা এখনও অধরা। কিন্তু ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ নেই। ঘটনাটি ঘিরে এখন জোর চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ঘটনার ভিডিওটি হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে। যা সচরাচর দেখা যায় না। এক মন্দিরে পুজো, আরাধনা চলাকালীন এক চিকিৎসক হাজির হয়েছেন। স্টেথোস্কোপ নিয়েই তিনি সোজা পৌঁছে যান রাধাকৃষ্ণের মূর্তির কাছে। না, পুজো দিতে যাননি তিনি। কোনও প্রার্থনা করার জন্যেও মূর্তির কাছে পৌঁছননি। তিনি গিয়েছিলেন রাধাকৃষ্ণের হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করতে।
চিকিৎসককে মন্দিরে ডেকে এনেছিলেন কয়েকজন ভক্ত। তাঁদের দাবি, আরাধনার সময় তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের হৃদস্পন্দন শুনতে পেয়েছেন। সেই সময় মন্দিরে রাধাকৃষ্ণের মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা চলছিল। ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। কয়েক হাজার ভক্তের সমাগমে মুখর ছিল মন্দির চত্বর। আচমকা ভক্তদের এই দাবির পরে মন্দিরে আরও ভক্তের ভিড় উপচে পড়ে।
কেউ ভগবানের উপস্থিতি টের পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন, কেউ বা মূর্ছা যান। সকলেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে এই ঘটনায়। সত্যতা যাচাই করতে ডেকে আনা হয় এক তরুণ চিকিৎসককে। তিনি নিরুপায় হয়ে হাজির হন মন্দিরে। স্টেথোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন রাধাকৃষ্ণের হৃদস্পন্দন। তবে শেষপর্যন্ত তিনি আদৌ কিছু শুনতে পেয়েছেন কিনা, তা জানা যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই চিকিৎসক পরীক্ষা করার পর এক ভক্ত এসে স্টেথোস্কোপ দিয়ে রাধার হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করতে শুরু করেন। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই একাংশের নেটিজেনরা হেসে লুটোপুটি খান। মজার মজার কমেন্টে ভরে গেছে পোস্টটি।
একজন লিখেছেন, 'রাধাকৃষ্ণের মূর্তির পাশাপাশি ভক্তদের হৃদস্পন্দন ঠিকঠাক আছে কিনা, চিকিৎসকের তাও পরীক্ষা করা উচিত।' আবার একজন লিখেছেন, 'বিজ্ঞানের হাত ধরে সমাজ এগিয়ে চললেও, কিছু মানুষ এখনও পিছিয়ে রয়েছেন।' একজন লিখেছেন, 'কী প্রসাদ খেয়েছিলেন ভক্তরা, কে জানে! সকলের একসঙ্গে শরীর খারাপ হয়েছে!' আবার একজন লিখেছেন, 'চিকিৎসকের কোনও কান্ডজ্ঞান নেই। ভক্তদের অন্ধবিশ্বাস তিনিই তো দূর করতে পারতেন।'
প্রসঙ্গত, এর আগেও ২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় একধরনের ঘটনা ঘটেছিল। সেবার হাসপাতালে এক পুরোহিত কাঁদতে কাঁদতে হাজির হয়েছিলেন। হাতে ছিল গোপালের মূর্তি। কান্নায় ভেঙে পড়ে পুরোহিত জানিয়েছিলেন, গোপালের হাত ভেঙে গেছে। যেভাবেই তা ঠিক করে দেওয়া হোক। খানিকক্ষণ দ্বিধাগ্রস্ত থাকার পর শ্রী কৃষ্ণের নামে ঘটনাটি রেজিস্ট্রার করে ওই মূর্তিটির হাত ব্যান্ডেজ দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দেন তাঁরা।
