আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে৷ লখনউ শহরের গোমতিনগরের ঘটনা এটি। সূত্রে জানা গিয়েছে এলাকার পত্রকারপুরম চৌকে একটি পেট্রোল পাম্পে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ও ভিডিও সূত্রে জানা গিয়েছে, কাহিনি এক মহিলার অভিযোগ ঘিরে। তিনি দাবি করেন তিনি পেট্রোল পাম্পে সবার আগে পৌঁছেছেন। সেক্ষেত্রে তাঁর গাড়িতে প্রথমে পেট্রোল দেওয়া উচিত। পরিস্থিতি বেসামাল হয় এরপর। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন পুরুষ গ্রাহক এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে জানতে চান। তাঁরা পালটা মহিলাকে প্রশ্ন করে বলেন 'আপনি যদি আগে এসে থাকেন, তাহলে এতক্ষণ কোথায় ছিলেন?' এই প্রশ্ন থেকেই শুরু হয় উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ওই মহিলা কথা-কাটাকাটি থেকে এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি আশপাশের লোকজনকে চিৎকার করে গালিগালাজ করছেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন তিনি রাগের মাথায় নিজের চপ্পল তুলে পুরুষদের হুমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাঁদের মধ্যে থেকে এক ব্যক্তি ১১২-এ কল করার হুমকি দেন। অন্য একজন, যিনি মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনার ভিডিও করে রাখছিলেন, তাঁকেও লক্ষ্য করে এগিয়ে যান ওই মহিলা। তিনি ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং তাঁকে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ।
ভিডিওতে তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা গিয়েছে৷ তিনি এমন এক মন্তব্য করে বসেন, তাতে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তবে পেট্রোল পাম্পের কর্মচারী কিংবা অন্য কোনও গ্রাহক এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেননি বলেই সূত্রে জানা গিয়েছে৷
একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, 'অভিযুক্ত মহিলা চপ্পল বের করে লোকজনকে মারতে যান কারণ উনি বলছেন, উনিই প্রথম লাইনে ছিলেন। উনার ভাষা শুনুন, একজন পুরুষ এরকম বললে মহিলা হেনস্থার আওতায় পড়ত। এমনকি আইন পদক্ষেপ অবধি গড়াত।'

আরেকজন ব্যঙ্গ করে লেখেন, 'বাহ! ভারতীয় নারী—এত মায়া আর ভালোবাসার ভাষা।' তবে কারও কারও মত, 'এই ক্ষেত্রে মহিলা ঠিকই বলেছেন। উনি আগে এসেছিলেন।' আরেকজন আবার ব্যাঙ্গার্থক মন্তব্য করে বলেন, 'দেখে মনে হচ্ছে, উনি দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।'
এই ঘটনা নতুন নয়৷ এর আগেও এমন ঘটনা একাধিকবার সামনে এসেছে। চলতি বছরের শুরুতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে এক যুবতী মাত্র সাত মিনিট দেরিতে পৌঁছানোয় এক ক্যাব ড্রাইভারকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। উপরন্তু গাড়ি থেকে নামতেও চান না। সেই ঘটনাতেও ড্রাইভার শান্ত থেকে পরিস্থিতি সামাল দেন।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই ধরণের চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলি বারবার সামনে আসায় সমাজে নারী-পুরুষের আচরণগত দ্বিমুখী মানদণ্ড নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
