আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি কেরালার কোল্লাম জেলার বাসিন্দা আথুল্যা শেখরের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড়। জানা গিয়েছে, আথুল্যা গত এক বছর ধরে দেশের বাইরে সারজাহ শহরে কাজের সূত্রে বসবাস করছিলেন। তাঁর ৩০তম জন্মদিনের দিনই নতুন একটি চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই দিন সকালেই তাঁকে তাঁর ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য। 

বর্তমানে আথুল্যার পরিবারের সদস্যরা এমন কিছু ভিডিও প্রকাশ করেছেন যা ভয়াবহ৷ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে তাঁদের মেয়ে আথুল্যাকে তাঁর স্বামী সতীশ অস্বাভাবিক নির্যাতন করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত মহিলা এবং তাঁর স্বামীর একাধিক ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে সতীশ আথুল্যার সঙ্গে হিংসাত্মক আচরণ করছে৷ 

আথুলিয়ার মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে তদন্ত করা হলেও, তার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন যে যৌতুকের জন্য তার স্বামী তাকে হয়রানি করছিলেন।

সুত্রে জানা গিয়েছে, কেরালার কোল্লাম জেলার চাভারার বাসিন্দা আথুল্যাকে ১৯ জুলাই সারজাহে তাঁর ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। সেখানে তিনি তাঁর স্বামী সতীশ শঙ্করের সঙ্গে থাকতেন।

তাঁর বাবা রাজশেখরন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে আথুল্যা একটি নতুন চাকরি শুরু করার পরিকল্পনা করছিলেন। 'সতীশ তাঁকে কখনও চাকরিতে যেতে দেননি। তাঁর পরিকল্পনা ছিল চাকরি খুঁজে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। পাশাপাশি মেয়ের দেখাশোনা করা,' যুবতীর বাবার বয়ান অনুযায়ী জানা গিয়েছে।

'গত বছর, সে আমার কাছে অভিযোগ করেছিল যে তার স্বামী তাকে ক্রমাগত নির্যাতন করছে। তবে, সতীশ ক্ষমা চেয়েছে। এবং এই ধরণের কাজ আর না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সে পুনরায় তার সঙ্গেই থেকে যায়,' বাবা বলেন।

জানা গিয়েছে, এর আগেও এক বিবৃতিতে আথুল্যার বাবা বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন না যে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছে। তাঁর মৃত্যুকে “রহস্যময়” বলে অভিহিত করেছিলেন। 'আমি বিশ্বাস করি না যে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে মারা যাবে। তার মেয়ের সঙ্গে তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁর এই মৃত্যু রহস্যময়,' তিনি বলেন।

আরও পড়ুনঃ জোর করে গাড়িতে তুলে প্রথমে নির্জন জায়গায় নিয়ে গেল, এরপর চলল লাগাতার ধর্ষণ, হকি কোচের বিরুদ্ধে তরুণী যা

'আমাদের খুঁজে বের করতে হবে তার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছে। সে (মহিলার স্বামী) একজন মদ্যপ। সে সবসময় হিংস্র হয়ে উঠত মেয়ের উপর', যুবতীর বাবা অভিযোগ করেছেন।

পূর্ববর্তী এক ঘটনায়, অথুল্যের স্বামী তাঁকে মারধরের কথা স্বীকার করেছিলেন। তিনি তাঁর এই আক্রমণাত্মক আচরণকে ন্যায্যতা দিয়েছিলেন। এমনকি বলেছিলেন যে তিনি 'ভালোবাসার বশবর্তী হয়ে' এই আচরণ করেন।

অভিযোগ দায়ের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সতীশের বিরুদ্ধে ধারা ৮৫, ১১৫(২), ১১৮(১),১০৩(১) এবং যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন, ১৯৬১ এর ধারা ৪,৩ এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

মামলার প্রাথমিক তদন্তে (এফআইআর) আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে সতীশের সঙ্গে বিবাহের সময় আথুল্যার পরিবারের সদস্যরা সতীশকে একটি দ্বি-চাকার গাড়ি এবং সোনা যৌতুক হিসেবে দিয়েছিল। অন্যদিকে, মামলার তদন্তকারী পুলিশ জানিয়েছে বর্তমানে পুরো ঘটনার পর্যবেক্ষণ চলছে। আইনি নিয়মকানুন শেষ হলে একটি দল অভিযুক্তকে কেরালায় নিয়ে আসবে।