আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওড়িশায় সম্প্রতি ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটেছে। জাজপুরের এক নাবালিকাকে তাঁরই কোচ ধর্ষণ করেছে। সূত্রে জানা গিয়েছে, তরুণীর বয়স মাত্র ১৫ বছর। তিনি একজন হকি প্রশিক্ষণার্থী। চলতি মাসের শুরুতে তাঁর কোচ প্রথমে তাঁকে অপহরণ করে। এরপর তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। তরুণীর এই পরিণতি ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ঘটনার প্রায় কুড়ি দিন পর এসে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ মঙ্গলবার পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তরুণীর দুই প্রাক্তন কোচও ভয়াবহ এই ধর্ষনকান্ডে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। তরুণী প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে কাওকে জানাতে পারেননি৷ ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর সোমবার, তিনি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন।

খবর মারফত জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন ভুক্তভোগী তরুণী প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, বাড়ি ফেরার সময় তাঁর কোচ এবং তাঁর সহযোগীরা তাঁকে একপ্রকার জোর করে একটি গাড়িতে তোলেন। এরপর তরুণীকে একটি লজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে যৌন নির্যাতন করে। এরপরও থামেনি অভিযুক্তরা৷ তারা তরুণীকে হুমকি দেয় যে ঘটনাটি কাউকে জানালে অথবা এটি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করলে তাঁকে হত্যা করা হবে।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করেছেন। তাঁদের কে জেরা করা হয়েছে। 

'আমরা একজন হকি কোচ এবং দুইজন প্রাক্তন কোচকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁদের মধ্যে একজন তরুণীকে ধর্ষণ করেছে। এবং অন্য দুজন তাঁকে অপরাধে সহায়তা করেছে,' জাজপুরের পুলিশ সুপার যশপ্রতাপ শ্রীমল জানিয়েছেন। 

ঘটনার জেরে পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংবিধান ও পকসো আইনের ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ সহ মামলা দায়ের করেছে। আটক সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও উল্লেখযোগ্য প্রমাণ না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। 

গত কয়েক মাস ধরে, ওড়িশায় যৌন নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর ফলে ব্যাপক ক্ষোভ এবং রাজনৈতিক পদক্ষেপের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বালাসোরে, এক ২০ বছর বয়সী কলেজ ছাত্রী তাঁর অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করার পর প্রতিবাদ স্বরূপ আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় গোটা দেশ তোলপাড়। 

অন্যদিকে চলতি মাসে বালাসোরে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী দীর্ঘ সময় ধরে যৌন ও মানসিক হেনস্থার অভিযোগ করার পর দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুবনেশ্বরে ১৯ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে কংগ্রেসের ওড়িশা এনএসইউআই সভাপতি উদিত প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জুন মাসে, গোপালপুর সমুদ্র সৈকতের কাছে ২০ বছর বয়সী এক কলেজ ছাত্রীকে ১০ জন পুরুষ গণধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ভুক্তভোগী গভীর রাতে তাঁর অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার জেরে এনএইচআরসি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে নোটিশ পাঠায় এবং পুলিশ সাতজন সন্দেহভাজনকে আটক করে।