আজকাল ওয়েবডেস্ক: রোমহর্ষক! ভাবুন তো, নিঃশ্বাস না নিয়েও দিব্যি সুস্থ থাকা যায় - সম্প্রতি এমনই এক 'কৃত্রিম রক্ত' তৈরি হয়েছে। হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা এই পথে ঠিক কত দূর হাঁটলেন? 


১)  ২০২২ সালে হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা এমন এক নতুন ধরনের 'জলের মতো তরল' আবিষ্কার করেন, যা রক্তের চেয়েও অনেক বেশি অক্সিজেন ধরে রাখতে পারে! ভাবা যায়?  রক্তে যতটা অক্সিজেন থাকে, এই তরলে নাকি তার চেয়েও ঢের বেশি ঘনত্বে অক্সিজেন মজুত রাখা সম্ভব। অস্ত্রোপচারের সময় বা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের আগে এটি 'ইনজেকশনযোগ্য অক্সিজেন' হিসেবে বিরাট কাজে আসতে পারে।

২) হার্ভার্ডের গবেষণার এই সব কাণ্ডকারখানা একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে চলছে। নাম 'ওয়াইস ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজিক্যালি ইন্সপায়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং'। প্রকৃতির জটিল কলাকৌশল থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখানে এমন সব প্রযুক্তি তৈরি করছেন, যা মানব স্বাস্থ্যকে রাতারাতি পাল্টে দিতে পারে।

৩) কৃত্রিম রক্ত মানেই সেখানে রক্তের মূল উপাদান হিমোগ্লোবিনকে কাজে লাগাতে হবে। হার্ভার্ড সহ বিশ্বের বিভিন্ন ল্যাবে তাই হিমোগ্লোবিনকে কীভাবে রক্তকণিকার বাইরে বার করে এনেও স্থিতিশীল রাখা যায়, সেই কৌশল নিয়েই চলছে জোরদার গবেষণা। এটাই কৃত্রিম রক্ত তৈরির অন্যতম প্রধান ভিত্তি।

৪) হার্ভার্ডের ওয়াইস ইনস্টিটিউটের প্রধান ডোনাল্ড ই. ইংবার কিন্তু চিপের ওপর আস্ত একটি 'ফুসফুস' তৈরি করে ফেলেছেন! এই প্রযুক্তিকে বলা হয় 'অর্গান-অন-এ-চিপ'। এই চিপের ভেতরে রক্ত সংবহনতন্ত্রের সব খুঁটিনাটি যাচাই করা যায়। তাই কৃত্রিম রক্তের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য এই 'চিপে-থাকা-ফুসফুস' অনন্য।

৫) কেবল কৃত্রিম রক্ত তৈরি করলেই হবে না, শরীরের মধ্যে তা সঞ্চালনের জন্য চাই উপযুক্ত রক্তনালী। হার্ভার্ডের গবেষকরা এখন থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ল্যাবেই তৈরি করছেন রক্তনালী জালিকা। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে যদি কৃত্রিমভাবে অঙ্গ তৈরি করা হয়, সেখানে রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থাটাও তৈরি থাকবে!

৬) হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা এখন সিন্থেটিক বায়োলজি বা সংশ্লেষিত জীববিদ্যা ব্যবহার করছেন। এর মানে হলো, জীববিদ্যা ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞানকে মিলিয়ে এমন নতুন জৈব সিস্টেম তৈরি করা, যা প্রকৃতিতে আগে ছিল না। এই পথেই হয়তো এমন এক উন্নতমানের কৃত্রিম রক্ত তৈরির স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা, যা এক দিন মানুষের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড গড়বে।