আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুখের সংসারে হঠাৎ অশান্তি। কারণ? সেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক। স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্কে ফাটল ধরেই গিয়েছিল। কিন্তু পরিণতি হল আরও ভয়াবহ। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে প্রাণ হারালেন এক যুবক। রাগের মাথায় স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন করেছেন তাঁর স্ত্রী।
প্রতিবেশীরা জানতে পারেন, স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝামেলা চলছে। সেই ঝামেলাই যে শেষমেশ এমন মোড় নেবে, তা যেন কল্পনাতীত সকলের কাছে। সুখী দাম্পত্যে চিড় ধরেছিল বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে। যুবকের সেই বিবাহিত সম্পর্কের বিষয়টিও এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। বিশ্বাসঘাতক স্বামীর উপর প্রতিশোধ নিতেই খুন করলেন স্ত্রী। স্বামীকে ঘুম পাড়িয়ে খুনের ঘটনাটি ঘটান তিনি। টানা কয়েকদিন ঘরের মধ্যে পড়েছিল যুবকের রক্তাক্ত দেহটি। অবশেষে গত রবিবার, তাঁর পচাগলা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা- খারসওয়ান জেলায়। সোমবার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীর সঙ্গে নিত্যদিন অশান্তি হত স্ত্রীর। সেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে ঘিরে স্বামীকে কুপিয়ে খুন করেন ২৯ বছরের তরুণী।
জানা গেছে, অভিযুক্ত তরুণীর নাম, পূজা কুমারী। গত ১৫ জুলাই রাতে পাশাপাশি স্বামী, স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থাতেই রাজেশ কুমার মাহতা নামের যুবকের উপর কুড়ুল নিয়ে হামলা করেন পূজা। ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামীকে একাধিকবার কুড়ুল দিয়ে কোপ মারেন। রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানাতেই রাজেশ কুমার মাহতার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাগাতার ধর্ষণ! বিজেপি বিধায়কের ছেলের কেচ্ছায় তোলপাড় এই রাজ্য
পুলিশ আধিকারিক কুমার লুনায়েত জানিয়েছেন, স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা আগেই করেছিলেন পূজা। তবে সঠিক সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। ঘটনার দিন সন্তানদের অন্য ঘরে ঘুম পাড়িয়ে এসেছিলেন তিনি। রাজেশ খাওয়াদাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। গভীর রাতে কুড়ুল নিয়ে রাজেশকে কোপ মারেন।
রাজেশ মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত হতেই ঘরের দরজা পিছন থেকে বন্ধ করে বেরিয়ে যান পূজা। এরপর তিন সন্তানকে ঘুম থেকে তুলে তিনি পালিয়ে যান। পরদিন সকাল থেকে গত কয়েকদিনে প্রতিবেশীরা তাঁদের কোনও সাড়াশব্দ পাননি। তাতেই সন্দেহ হয়। পুলিশে খবর দেন তাঁরা। রবিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বাড়ির দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় রাজেশের পচাগলা দেহ।
ঘরের মধ্যেই ছিল রক্ত মাখা কুড়ুলটি। ঘরের ছন্নছাড়া অবস্থা দেখেই পুলিশের সন্দেহ হয়। এদিকে প্রতিবেশীরা জানান, সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী পূজা পলাতক। খুনের সন্দেহ হতেই পুলিশ পূজার খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। অবশেষে আটক করে তাঁকে। দীর্ঘ পুলিশি জেরায় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কাঁদতে কাঁদতেই জানান, স্বামীকে তিনি খুন করেছেন।
পূজা আরও জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী, রাজেশ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অন্য এক তরুণীর সঙ্গে দিনের পর দিন কথা বলতেন ফোনে। প্রথমে সন্দেহ হলেও, পরে জানতে পারেন, সেই তরুণীর সঙ্গেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত স্বামী। অবশেষে তিনি খুনের পরিকল্পনা করেন। পূজাকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে তারা। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি এবং রক্তের দাগ লাগা দু'টি স্মার্টফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
