আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্টেশনে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল ট্রেনটি। ট্রেনে না উঠে, স্টেশনেই বসেছিলেন এক বৃদ্ধ যাত্রী। ভেবেছিলেন, স্টেশনে আরও কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে, হাঁটাহাঁটি করে তারপর ট্রেনে উঠবেন। তাতেই ঘটল বিপত্তি। চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়েই ভয়ঙ্কর পরিণতি হল ওই বৃদ্ধ যাত্রীর।
স্টেশনে বসেই ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে খেয়াল করেননি, ট্রেনটি ইতিমধ্যেই ছেড়ে দিয়েছে। এমনকী গতি বাড়িয়ে সেটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়েও চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ বৃদ্ধ ফোন থেকে চোখ তুলে তাকাতেই চমকে ওঠেন। দেখেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে প্রায় ট্রেনটি চলেই যাচ্ছে। এরপর ফোন রেখেই দ্রুত ছুটে গিয়ে চলন্ত ট্রেনে উঠতে যান।
চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়েই ঘটল বিপত্তি। চলন্ত ট্রেন থেকে প্রথম তাঁর হাত ফসকে যায়। এরপর পা ফসকে পড়ে যান তিনি। ট্রেনের সঙ্গে কিছুদূর ছেঁচড়ে এগিয়েও যান। আরও কিছুদূর ওভাবে গেলেই মৃত্যু হতে পারত বৃদ্ধ যাত্রীর। কিন্তু বরাতজোরে প্রাণ রক্ষা পায়। তাঁকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে আনেন এক আরপিএফ কর্মী।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। জানা গেছে, বেতুল রেল স্টেশনে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে। ৬৬ বছরের বৃদ্ধ যাত্রী রাকেশ কুমার জৈন চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়েন। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। নিজের গাফিলতিতেই চরম পরিণতি হতে পারত তাঁর। যদি সময় মতো আরপিএফ কর্মী এগিয়ে না আসতেন।
জানা গেছে, রাকেশ কুমার জৈন বেতুল রেল স্টেশনে বসেছিলেন। তিনি ভোপাল- নাগপুর স্বর্ন জয়ন্তী এক্সপ্রেসর যাত্রী ছিলেন। স্টেশনে কিছুক্ষণ হাঁটাচলার পর কামরার সামনেই বসে পড়েন ফোন হাতে। ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে খেয়াল করেননি, তখন ট্রেনটি ছাড়ার সময় হয়ে গেছে। এমনকী ফোনে তিনি এতটাই মগ্ন ছিলেন, ট্রেনের হুইসেল পর্যন্ত শুনতে পাননি।
আর এদিকে ঠিক সময় মতো ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। প্রথমে ধীরে ধীরে, তারপর গতি বাড়িয়ে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে প্রায় চলে যাচ্ছিল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। তখনই বৃদ্ধ চোখ তুলে দেখেন, ট্রেনটি চলে যাচ্ছে। তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে চলন্ত ট্রেনে উঠতে যান। কামরার সামনের হ্যান্ডেলটি শক্ত করে ধরেছিলেন। হঠাৎ সেখান থেকে তাঁর হাত পিছলে যায়। এরপর চলন্ত ট্রেনের পাশাপাশিই মুখ থুবড়ে পড়ে যান বৃদ্ধ।
ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে কিছুদূর এগিয়েও যান। সেই সময় প্ল্যাটফর্মে কর্মরত ছিলেন আরপিএফ কর্মী সত্য প্রকাশ রাজুরকর। তিনিই প্রথমে খেয়াল করেন, বৃদ্ধের এহেন দশা। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান বৃদ্ধ যাত্রীকে উদ্ধার করতে। তিনিই মুহূর্তের মধ্যে বৃদ্ধকে উদ্ধার করে প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসেন। গোটা ঘটনায় হকচকিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে গুরুতর কোনও চোট পাননি। ঠিক সময়ে আরপিএফ কর্মী উদ্ধার না করলে, ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারত তাঁর।
রেল আধিকারিকদের বৃদ্ধ জানিয়েছেন, তিনি ভেবেছিলেন কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেই ট্রেনে উঠে পড়বেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা স্ক্রোল করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। চলন্ত ট্রেন থেকে বৃদ্ধের ছিটকে পড়ার মুহূর্তটি ধরা পড়েছে সিসিটিভিতে। যে ফুটেজ দেখিয়ে যাত্রীদের সতর্ক করেছে রেল। মুহূর্তের ভুলে, সতর্কতার অভাবে কীভাবে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে, তাও জানিয়েছে রেল।
