অভিনেত্রী নম্রতা শিরোদকর তাঁর বোন, দক্ষিণী তারকা মহেশ বাবু তাঁর ভগ্নিপতি। তিনি, শিল্পা শিরোদকর। অক্ষয় কুমার, গোবিন্দ, চাঙ্কি পাণ্ডে, সুনীল শেট্টির সঙ্গে একসময় চুটিয়ে কাজ করেছেন বলিউডে। তাঁর নাচ, লাস্য, অভিনয় তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল। এরপর লম্বা বিরতি নেওয়ার পর ২০১৩-য় শিল্পা ছোট পর্দায় হিন্দি ধারাবাহিক ‘এক মুঠ্ঠি আসমান’-এ অভিনয় করেন। ‘কমলা বাই’ চরিত্রে যথারীতি তিনি ফের আলাদা করে সকলের নজর কাড়েন।

 

 
‘বিগ বস্‌ ১৮’-এর চূড়ান্ত পর্বের হাতেগোনা কয়েক দিন আগে হঠাৎ বাদ পড়েন শিল্পা শিরোদকর। সেই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। ফের একবার শিরোনাম দখল করলেন অভিনেত্রী। তবে এবার কারণ আরও ভয়াবহ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, ১৯৯৫ সালে একটি ছবির শুটিং চলাকালীন এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়েছে!

 


এই ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে শিল্পা বলেন, “আমি শুটিং সেরে হোটেলের ঘরে ফিরে আসি। তখনকার দিনে ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। হঠাৎ দেখি ২০-২৫টা মিসড কল। আমার বাবা ফোন করে কাঁপা গলায় বলেছিলেন, ‘তুই ঠিক আছিস তো? তোকে গুলি করে মারা হয়েছে বলে খবর এসেছে!"

 

আরও পড়ুন: একটানা টপলেস দৃশ্যে অভিনয় করে রাতের ঘুম কেড়েছিলেন এই বলি অভিনেত্রী! জানেন এখন কী পরিণতি হয়েছে তাঁর?


এই বিভ্রান্তির সূত্রপাত হয়েছিল সুনীল শেট্টির সঙ্গে তাঁর একটি সিনেমা ‘রঘুবীর’-এর শুটিংয়ের সময়। শিল্পা জানান শুটিং হচ্ছিল কুল্লু-মানালির মতো পাহাড়ি জায়গায়। বেশকিছু জায়গায় এমন খবর রটে গিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই পরিবার থেকে শুরু করে গোটা ইন্ডাস্ট্রি সেই সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

 

পরে জানা যায়, এটি ছিল ছবির প্রযোজকের পরিকল্পিত একটি প্রচারমূলক স্টান্ট। বিষয়টি জানার পর শিল্পা হতবাক হয়ে যান, কিন্তু অভিযোগ করেননি। তাঁর কথায়, “তখন পিআর বা সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। আমাদের কিছুই জানানো হতো না। আমি একেবারে শেষ মানুষ ছিলাম, যে এটা জানতে পেরেছিল।”

 

অভিনেত্রী জানান, আজও এই স্মৃতি শিল্পার মনে দাগ কেটে রয়েছে। বলিউডে সেই সময়ে প্রচারের জন্য এমন অনেক ‘কৌশল’ নেওয়া হত, যার কোনও নিয়ম বা অনুমতির প্রয়োজন হতো না।

 


প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই জানা গিয়েছিল, কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত শিল্পা। সমাজমাধ্যমে নিজেই এই কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন তিনি। অভিনেত্রীর শারীরিক অবস্থার খবর পাওয়ার পর থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন তাঁর অনুরাগীরা। 

 

 

কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে শিল্পা জানান, এক সময় বলিউডে তাঁকে অযাচিত মানুষের চোখে দেখা হতো‌। তখন বেশিরভাগ সময়ই মন মরা হয়ে থাকতেন তিনি। সেই সময় মাধুরী দীক্ষিতের ম্যানেজার ঋকু নাথ তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে। এরপর কলকাতার এক ধুমধামপূর্ণ ছবির মহরতে মিঠুন নিজে ঘোষণা করেন, নতুন ছবির নায়িকা হচ্ছেন শিল্পা শিরোদকর।এই ঘোষণাই তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। সেখান থেকেই তাঁকে কাস্ট করা হয় রমেশ সিপ্পির ছবি ‘ভ্রষ্টাচার’-এ, যেখানে তিনি অভিনয় করেন একজন অন্ধ তরুণীর চরিত্রে, মিঠুনের বিপরীতে। এবং সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর আসল বলিউড সফর। শিল্পার কথায়, “আমি আজ যেখানেই দাঁড়িয়ে আছি, তার কৃতিত্ব মিঠুনদার। তিনিই আমায় সুযোগ করে দিয়েছিলেন।”