আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি কর্ণাটকে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটেছে৷ দুর্ঘটনার জেরে সাত বছর বয়সী এক শিশু প্রাণ হারিয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে বেঙ্গালুরুর মাগাডি এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বাস চালককে আটক করে। তদন্ত শুরু হয়৷
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিশুর নাম এল. রজত। শিশুর বয়স সাত বছর। খবর অনুযায়ী সে এসবিএস স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। হোসাপাল্যা জনতা কলোনির বাসিন্দা রজতরা। জানা গিয়েছে রজতের বাবা-মা, লোকেশ ও রাধা, দুজনেই দিনমজুরির কাজ করেন।কোল্লেগলের হানুর থেকে আসা দিনমজুর তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, রজত ও তার বোন দুসিতা প্রতিদিনের মতো সেদিনও স্কুল বাসে চেপে বাড়ি ফিরছিল। তথ্য অনুসারে, তাদের বাসটি প্রথমে অন্য শিশুদের নামিয়ে দিয়ে সবশেষে রজত ও তার বোনকে নামায়।
উল্লেখিত স্কুলবাসটিতে কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী রোজ যাতায়াত করে। তাদের নিরাপত্তার জন্য একজন মহিলা সহকর্মী থাকেন। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন সেই মহিলা সহকর্মী রজত ও দুসিতার আগেই এক স্টপে নেমে যান।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে, এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'মহিলা সহকর্মী নেমে যাওয়ার পর চালক ভিনোদ বাস চালানো অব্যাহত রাখেন। রজত ও তার বোন বাসের দরজার কাছে বসে ছিল। বাসের দরজা সঠিকভাবে বন্ধ ছিল না। বাস চলার সময় ভিনোদ রজতকে দরজা বন্ধ করতে বলেন। দরজার দিকে এগিয়ে গেলে রাজত ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায়। এরপর বাসের পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।'
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর চালক ভিনোদ, রজতকে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার জেরে পুলিশ বাস চালক আর. ভিনোদকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে। সাধারণত এই ধরনের দুর্ঘটনাকে অসাবধানতাজনিত মৃত্যু হিসেবে দেখা হয়, যা জামিনযোগ্য অপরাধ। তবে এই ক্ষেত্রে চালকের গাফিলতিকে গুরুতর মনে করে পুলিশ তাঁকে জামিন অযোগ্য ধারা -‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা নয়, কিন্তু এমন কাজ যার ফলে মৃত্যু ঘটেছে’ - এর আওতায় মামলা দায়ের করে।
তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন,'ভিনোদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল। এক বাসের দরজা সঠিক ভাবে বন্ধ রাখা এবং দুই চলন্ত বাসে কোনও শিশুকে ওই দরজা ঠিক করতে না বলা। তিনি দুটো ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছেন।'
বর্তমানে পুলিশ জানিয়েছে, ভিনোদ কে রামনগর জেলা কারাগারে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বাকি দিকও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সর্বোপরি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার জেরে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷
