আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু গোটা দেশে এবার তার প্রভাব ভালই বিস্তার করেছে। ফলে এখনও পর্যন্ত যে হারে বৃষ্টি হয়েছে তা প্রায় স্বাভাবিক বলেই জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। সেখান থেকে জানা গিয়েছে গোটা দেশের এখনও পর্যন্ত ৯ শতাংশের বেশি হারে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে জুন এবং জুলাই মাসে বৃষ্টির জেরে খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছে দেশের কৃষকদের মুখে।


যদিও অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, বিহার সহ কয়েকটি রাজ্যে খানিকটা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে তার সঙ্গে গোটা দেশের বৃষ্টিকে বিচার করলে হবে না। অন্যদিকে গত পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি নিয়ে ২০২৫–এর জুন শেষ করল কলকাতা। বর্ষা শুরুর প্রথম মাসে মহানগর গড়ে ২৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি পায়। যদিও এবছর তার থেকে সামান্য কিছুটা কমই বৃষ্টি পেয়েছে শহর। কিন্তু সামান্যই সেই ঘাটতি।


ঘটনা হল, ২০২১ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত জুনের কলকাতা এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি পেয়েছে শুধু ’২১ সালেই। উপরন্তু মৌসম ভবন জানিয়েছে, জুলাইয়ে দেশের বেশির ভাগ জায়গাই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি পেতে চলেছে এবার।


২৮ জুন গোটা দেশ ছেয়ে গিয়েছে বর্ষার মেঘে ভরা দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাসে। সাধারণত ৮ জুলাইয়ের আগে এমন হয় না। এবছর নির্ধারিত সেই তারিখের ১০ দিন আগেই গোটা দেশে সরকারি ভাবে বর্ষা নেমেছে।


জুলাইয়ের ভারত কতটা বৃষ্টি পেতে চলেছে, সেই বিষয়ে মৌসম ভবনের অধিকর্তা বলেন, লং পিরিয়ড অ্যাভারেজ অনুযায়ী জুলাইয়ে ভারত গড়ে যতটা বৃষ্টি পায়, তার চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি পেতে চলেছে এ বার। আবহাওয়া বিজ্ঞানের পরিভাষা অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ের ৪ শতাংশের মধ্যে থাকলে ‘স্বাভাবিক’ এবং ৪ শতাংশের বেশি হলে ‘বেশি বৃষ্টি’ বলা হয়। জুলাইয়ে এমনটাই হওয়ার পূর্বাভাস।


আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি নিম্নচাপটি স্থান পরিবর্তন করে শনিবার ঝাড়খণ্ডের উপরে অবস্থান করছে। শনিবার রাতের মধ্যে ওই নিম্নচাপটি আরও কিছুটা উত্তর–পশ্চিমে সরে যাওয়ার লক্ষণও দেখাচ্ছে।


একই সঙ্গে অবশ্য আবহবিদরা জানিয়েছেন, রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর থেকে একটি মৌসুমি অক্ষরেখা রোহতক, কানপুর, বেনারস হয়ে ঝাড়খণ্ডের উপরে যেখানে নিম্নচাপটি অবস্থান করছে—সেই জায়গার উপর দিয়ে এগিয়ে দিঘা হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। বৃষ্টির সম্ভাবনা গাঙ্গেয় বঙ্গেও।

আরও পড়ুন: চলতি মাসেই ধর্মঘটের পথে ওলা, উবের, ব়্যাপিডো চালকরা, বেহাল হবে এই রাজ্য


ফলে চলতি বছরে বৃষ্টি নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হচ্ছে না ভারতের কৃষকদের। তবে যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হয় তাহলে সেখান থেকে খানিকটা হলেও সমস্যা তৈরি হতে পারে। সাধারণত এবছর যে হারে গরম হবে বলে সকলে আশঙ্কা করেছিল সেটা হয়নি। সেখানে খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। অন্যদিকে বর্ষারাণী সময়ের আগে প্রবেশ করে গরমকে আরও খানিকটা কমিয়েছে। সেখান থেকে দেখতে হলে জুলাই মাসে বৃষ্টি তো হবেই এমনকি আগস্টেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে দেশে এবার বর্ষার কোনও ঘটতি হবে না এবং চাষ ভাল হবে বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে আবহবিদ সকলেই।