আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ভোপাল শহরে এক বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হিজড়ে সেজে বসবাস করছিলেন অভিযুক্ত। খবর অনুযায়ী, অভিযুক্তের নাম আব্দুল কালাম। তিনি ‘নেহা কিন্নর’ নামে নিজেকে পরিচয় দিতেন। এই নামেই মূলত স্থানীয়রা তাঁকে চিনত। পুলিশ জানিয়েছে, কালাম প্রকৃতপক্ষে একজন বাংলাদেশি নাগরিক। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করে ভারতের নাগরিকত্বের দাবি করেন। এই দীর্ঘ সময় ধরে কালাম তাঁর নিজের পরিচয় গোপন রাখেন। সমাজের কাছে নিজেকে একজন হিজড়ে নারীর পরিচয়ে বসবাস করছিলেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে চাঞ্চল্য৷
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে আব্দুল কালাম মহারাষ্ট্রে কিছুদিন থাকেন। পরে মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের মঙ্গলওয়ারা ও বুধওয়ারা এলাকায় গিয়ে থাকতে শুরু করেন। খবর অনুযায়ী, এই এলাকাগুলিতে তিনি স্থানীয় হিজড়ে সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশে যান। নিজের এক অন্য ছবি সমাজের কাছে তুলে ধরেন। কালাম নিজেকে ‘নেহা কিন্নর’ নাম দিয়ে সকলের কাছে পরিচয় দেন। খবর অনুযায়ী, নিজের ভুয়ো পরিচয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য এমনকি তিনি আধার কার্ড, ভোটার আইডি এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় ভারতীয় নথি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেন। পুলিশ ধারণা করছে, এইসব নথিপত্রের সাহায্যে তিনি নানারকম সরকারি সুবিধাও গ্রহণ করেছেন।
খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি গোয়েন্দা বিভাগের কাছে গোপন সূত্রে তথ্য আসে যে নেহা কিন্নর আসলে একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি ভারতে দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে থাকছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে তালাইয়া থানা পুলিশ প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাঁকে আটক করে। আটক করার পর তাঁর প্রকৃত নাম ও পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে আগেও একটি ফৌজদারি মামলা চলেছে। সূত্র অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ভোপালের এমপি নগর থানায় দায়ের হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেল, কয়েক লক্ষ টাকা দাবি প্রেমিকার বাবার! সহ্য করতে না পেরে
বর্তমানে আব্দুল কালামকে নিয়ে তদন্ত জারি রয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে কোনও বড় অপরাধ চক্র বা জালিয়াতি চক্র জড়িয়ে আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর (ডিপোর্টেশন) আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা জারি হয়নি। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে তদন্ত শেষ হওয়ার পরই তাঁকে পুনরায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ভোপালের পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, শহরে অবৈধভাবে বসবাস করা বিদেশি নাগরিকদের শনাক্ত করতে বর্তমানে ব্যাপক তল্লাশি শুরু হয়েছে। এই অভিযান চলাকালীন যদি কারও সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা জাল নথিপত্রের ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায়, তাহলে অবিলম্বে তা পুলিশের কাছে জানানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ এবং জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার রোধ করতে প্রশাসন নানা অভিযান চালাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ 'আমাকে আমার সন্তানদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে'! রাশিয়ান যুবতীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য পার্টনারের ...
ঘটনার জেরে শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য হিজড়ে সম্প্রদায়ের সদস্যদের নথিপত্রও খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। পুলিশের এই পদক্ষেপ অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির৷
