আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার থেকে উত্তাল মুজিব-হাসিনার জেলা। গোপালগঞ্জে বুধবার থেকেই জারি কার্ফু, ১৪৪ ধারা। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, শুক্রবারও জারি থাকবে কার্ফু। ১৮ জুলাই প্রথম ধাপে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলবে কার্ফু। এরপর তিন ঘণ্টা বিরতির পর দুপুর ২টো থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে কার্ফু।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবারের ঘটনায় সেনাবাহিনী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘রাজনৈতিক সংগঠনের সমাবেশ চলাকালে মঞ্চে আবার হামলা চালানো হয়। একই সঙ্গে জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়ে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালায় এবং বিপুল ককটেল, ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ও পুলিশ যৌথভাবে বিশৃঙ্খলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে গোপালগঞ্জে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়। সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পেশাদারত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।‘
আরও পড়ুন: দাউদাউ করে জ্বলছে গোটা শপিং মল, একের পর এক ঝলসে যাওয়া দেহ চেনাই দায়! মৃত্যুমিছিল-হাহাকার
এক সময়ের অন্তবর্তী সরকারের মুখ, এখন এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম দাবি করেছেন, এই ঘটনার দায় নিতে হবে সরকার ও প্রশাসনকে। নজর ছিল গোটা ঘটনায়, যেখানে একদিকে অভিযোগ আওয়ামী লিগের বিরুদ্ধে, আবার ঘটেছে হাসিনার জেলাতেই, সেখানে কী বলেন খোদ হাসিনা। একাধিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর একটি অডিও বার্তায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। ঘরে বসে থাকার সময় আর নেই। যা আছে, তা নিয়েই এখন পথে নামতে হবে। এদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।‘
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার মুজিব-হাসিনার গোপালগঞ্জে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল জাতীয় নাগরিক পার্টির তথা এনসিপি। সূত্রের খবর মুজিব-হাসিনা বিরোধী ওই মিছিলের প্রতিরোধ গড়ে তোলে আওয়ামী লিগ।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য মহম্মদ ইউনূসের অন্তবর্তী সরকার পদ্মাপারে আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও, গোপালগঞ্জ এখনও নিয়ম করে হাসিনার প্রত্যাবর্তনের মুহূর্ত গোনে। প্রায়ই নিয়ম করে আওয়ামী লিগ সেখানে জমায়েত করে বলেও জানা যায়। সেখানেই এনসিপি সমাবেশ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনা প্রসঙ্গে এনসিপি সমর্থকরা জানিয়েছেন, তাঁরা এগিয়ে যেতেই আওয়ামী লিগ সমর্থকরা তাঁদের উপর আক্রমণ চালায়। ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ-সেনা। অভিযোগ আওয়ামী লিগের কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটনায়। অন্যদিকে অভিযোগ ঘটনায় আহত হয়েছেন একধিক আওয়ামী লিগ কর্মী-সমর্থক। গোপালগঞ্জে অশান্তির পর জারি ১৪৪ ধারা, কার্ফু।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবারের হিংসা-অশান্তির ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে দীপ্ত সাহা, রমজান কাজী সোহেল রানা মোল্লার। তাঁদের বাড়ি সিকদারপাড়া, কোটালিপাড়া এবং টুঙ্গিপাড়ায়। নিহত সোহেল মোল্লা গোপালগঞ্জ শহরের চৌরঙ্গী এলাকার একটি দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। বেশকয়েকজন আহতদের একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন সুমন নামের বছর ২০-এর এক যুবক। পেশায় গাড়ি চালক তিনি। মহম্মদ ইউনূস ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করেছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ২৫জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
