আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্টের ঘটনার দায় আরসিবি কর্তৃপক্ষের উপরেই ঠেলল কর্নাটক সরকার। এর ফলে চাপ আরও বাড়ল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর উপর। কর্নাটক হাইকোর্টে সরকার জানিয়েছে, ঘটনার দায় পুরোপুরি আরসিবি কর্তৃপক্ষের উপরেই বর্তায়। শুধু তাই নয়, ওই পদপিষ্টের ঘটনায় পরোক্ষে বিরাট কোহলির নামও জড়িয়ে দিয়েছে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার।
হাইকোর্টে পদপিষ্টের ঘটনার রিপোর্ট জমা দিয়েছে কর্নাটক সরকার। প্রাথমিকভাবে সিদ্দারামাইয়ার সরকার দাবি করেছিল, ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা যাবে না। কিন্তু হাইকোর্ট জানায়, এই তদন্তের রিপোর্ট গোপন রাখার কোনও কারণ বা আইনি বৈধতা নেই। হাইকোর্ট সেই রিপোর্ট জনসমক্ষে এনেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কর্নাটক সরকার পুরো ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। সরকারের রিপোর্টে সব দায় চাপানো হয়েছে আরসিবির উপর। সরকারের দাবি, পুলিশ বা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এত বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সোশাল মিডিয়াতেও সেই নিয়ে পোস্ট করা হয়েছিল। যেহেতু সময় কম ছিল, তাই পুলিশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
আরও পড়ুন: ম্যাঞ্চেস্টার টেস্ট খেলবেন বুমরা? ভারতের প্রথম একাদশে একাধিক বদলের সম্ভাবনা
কর্নাটক সরকার আদালতে দাবি করেছে, পুলিশের সঙ্গে ভিড় সম্পর্কে কোনওরকম আলোচনা না করেই সোশাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট করে হয়েছিল আরসিবির তরফে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানানোর আগে কোনওরকম আলোচনাও করা হয়নি পুলিশের সঙ্গে। অনুমতিও নাকি নেওয়া হয়নি হয়ে জানিয়েছে সিদ্দারামাইয়া সরকার। সরকারের দাবি, আইপিএল জয়ের পর গভীর রাতে আরসিবি ম্যানেজমেন্ট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা ওই সেলিব্রেশন সম্পর্কে শুধু জানিয়েছিল। কোনওরকম অনুমতি চায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরসিবির সোশাল মিডিয়ায় হ্যান্ডেলগুলিতে একের পর এক পোস্ট করে সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানানো হয় চিন্নাস্বামীতে। সেই পোস্টগুলিতে বিরাট কোহলির ভিডিও–ও ছিল। তাতে বিরাটকেও দেখা গিয়েছে সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানাতে। সরকারের দাবি বিরাটের মতো জনপ্রিয় ক্রিকেটার সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানানোটাও ভিড়ের অন্যতম কারণ। সব মিলিয়ে আরসিবির পোস্টগুলিতে ৪৪ লক্ষ ভিউ হয়েছিল!
এদিকে, সরকারি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে পুলিশ চেয়েছিল ৯ জুন গোটা অনুষ্ঠানটি করতে। সদ্য আইপিএল জয়ের পরদিনই ওই অনুষ্ঠান করলে আবেগের বশবর্তী হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমাতে পারে, সেই আশঙ্কার কথা পুলিশ জানিয়েছিল। যদিও তাতে নাকি আরসিবি’র প্রবল আপত্তি ছিল। কারণ আইপিএল পিছিয়ে দেওয়ায় দ্রুত বিদেশি ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিতে হত বলে জানান আরসিবি কর্তারা। পুলিশকর্তাদের দাবি ছিল, ফ্র্যাঞ্চাইজির অনড় মনোভাবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও চিন্নাস্বামীর অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় পুলিশ। কিন্তু রোড শো বাতিল করা হয়। কিন্তু সেটা আবার আরসিবির তরফে ঘোষণা করা হয়নি। উল্টে চিন্নাস্বামীর মূল অনুষ্ঠানের ঘণ্টা দুয়েক আগেও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ওই বিজয় শোভাযাত্রা হবে বলে ঘোষণা করা হয়। টিকিট সংখ্যা সীমিত, তাও আবার বিনামূল্যে। তার মধ্যে ওই পোস্টের জন্যও অনেক মানুষ জমায়েত করেন বেঙ্গালুরুর রাস্তা এবং স্টেডিয়ামের বাইরে। আর সেই চূড়ান্ত অব্যবস্থার ফলেই ১১ জন সমর্থক প্রাণ হারান। আহতও হন অনেকে।
