সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বলিউডের দাপুটে অ্যাকশন হিরো তিনি। ৫০ পেরিয়েও দারুণ সুদর্শন। তিনি, জন আব্রাহাম।  যতটা চমকপ্রদ তাঁর বড়পর্দার উপস্থিতিতে, ততটাই সংযত আর নীরব তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। স্ত্রী প্রিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে খুব কমই জানে সাধারণ দর্শক। একসঙ্গে প্রকাশ্যেও কম ধরা দেন তাঁরা। বিপাশা বসুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০১৩ সালে ফিন্যানশিয়াল কনসালট্যান্ট প্রিয়া রাঞ্চলকে বিয়ে করেন জন আব্রাহাম।  একেবারে চুপিসারে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা—না কোনও বড় অনুষ্ঠান, না কোনও মিডিয়ার লাইমলাইট।

 

তবে বিয়ের ১১ বছর পরেও তাঁদের জীবনে নেই কোনও সন্তান। এর পিছনে যে আছে এক অত্যন্ত বাস্তবিক এবং চিন্তাশীল ব্যাখ্যা—সেটা জানালেন জন নিজেই। “বাবা-মা হওয়াটা সবার জন্য নয়— একমাত্র যখন আপনি নিজের দায়িত্ববোধ, সন্তান নিয়ে পাকাপাকি চিন্তা শেষ করবেন তখনই ফ্যামিলি প্ল্যানিং করা উচিত নচেৎ নয়!” মন্তব্য ছিল জনের। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে জন বলেছিলেন— “আমি এখন শুধু কাজের দিকেই মন দিচ্ছি। আমি আমার সিস্টেমসগুলো সঠিকভাবে সেট করতে চাই। আমার একটা ফুটবল দল আছে – নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি, একটা প্রোডাকশন হাউস চালাই, আবার নিজেও অভিনয় করি। এতকিছুর মধ্যে পরিবার শুরু করার ভাবনাটা খুব একটা সময় পাচ্ছে না।”

 

আরও পড়ুন: গানের মঞ্চ ছেড়ে এবার পরিচালকের আসনে, ‘অন্যরকম’ জঙ্গল-অ্যাডভেঞ্চারের ছবি বানাচ্ছেন অরিজিৎ! থাকবেন কোন কোন তারকা?

 

আরও গভীরভাবে তিনি বলেন— “আমি মনে করি, সন্তানের জন্ম শুধু তখনই দেওয়া উচিত যখন আপনি একজন অভিভাবক হতে প্রস্তুত থাকবেন। যদি সত্যিকারের ভালবাসা ও যত্ন দিয়ে বড় করতে না পারেন, তাহলে সন্তানের জন্ম দেওয়া উচিত নয়।” এমন স্পষ্ট ও বাস্তব বক্তব্য আজকের দিনে খুব কম তারকার মুখে শোনা যায়।

 

প্রিয়া রাঞ্চল—যিনি আলোয় আসেন না, তবু সম্পর্ককে স্থিতি দেন। প্রিয়া রাঞ্চল সংবাদমাধ্যমের আলোচনার একেবারেই বাইরে থাকেন। তাঁর সম্পর্কে জন বলেন— “আমি জানি আমি পারফেক্ট পার্টনার নই। কিন্তু প্রিয়া আমাদের সম্পর্কে স্থিতধি, স্থিরতা আর একরাশ মানবিকতা এনে দিয়েছে। সে কখনও প্রচার চায়নি, বরং সে বলেছে, ‘আমি মিডিয়াতে থাকতে চাই না, আমি আমার কাজটা করব, সেটাই যথেষ্ট।’” 

 

এই একজোড়া জুটির সম্পর্ক যেন আধুনিক বলিউডের ব্যতিক্রমী উদাহরণ—যেখানে জাঁকজমক নেই, কিন্তু আছে বাস্তবতা আর পরিণত বোঝাপড়া।  পেশাগত দিকেও ভরপুর জন—'দ্য ডিপ্লোম্যাট' সফলতার পর কী আসছে সামনে? ২০২৪ সালের শুরুতে মুক্তি পেয়েছে জনের ছবি 'দ্য ডিপ্লোম্যাট'।  রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার এই ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং বক্স অফিসেও করেছে ভাল ব্যবসা। এর পর তাঁর হাতে রয়েছে আরও একাধিক অ্যাকশনধর্মী ছবি।

 

প্রসঙ্গত, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যখন একের পর এক বলিউড সেলিব্রিটি ঝাঁপাচ্ছেন, তখন সেই দলে কিন্তু এখনও নেই জন আব্রাহাম।  কেন? “আমার মনে হয় আমি বড়পর্দার জন্যই তৈরি” —এক সাক্ষাৎকারে এভাবেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ‘ধুম’ খ্যাত এই অভিনেতা।

 

জন জানান, ওটিটি-তে কাজ করতে গেলে চাই বড়সড় অপারেশনাল টিম, প্রচুর রিসোর্স অথচ বেশিরভাগ সময়েই নির্মাতারা নিজেদের প্রজেক্টের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি (IP) নিজের কাছে রাখতে পারেন না। অভিনেতার কথায়, “এর রেভিনিউ যত না আসে, অপারেশন খরচে তার চেয়ে বেশি বেরিয়ে যায়। যার ফলে লাভ খুবই সীমিত।” তিনি আরও যোগ করেন, ওটিটিতে যুক্ত অনেকেই এই বাস্তবতা মানেন, আর সেই কারণেই তিনি এই মুহূর্তে ওয়েব সিরিজে কাজ করা ‘বাস্তবসম্মত’ মনে করছেন না।